ঝিনাইদহ জুড়ে এখন খুন, গুম অপহরণ ও ছিনতাইকীার আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে নিরাপদে ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা নেই। গ্রামে গ্রামে নীরবে চাঁদাবাজী করা হচ্ছে। অপহরণের পর টাকার বিনিময়ে প্রাণ ভিক্ষা পাচ্ছে মানুষের জীবন। টাকা না পেলে হত্যা করা হচ্ছে। আর এই খুনের তালিকায় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।

পুলিশী তথ্য  মতে অপহরণের টাকা না পেয়ে এ পর্যন্ত হরিনাকুণ্ডুর শ্রীরামপুর গ্রামের তাজের আলী, শৈলকুপা সুন্দাহ গ্রামের সোহেল, ব্যাপারীপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী গুরুদাসসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার হলিধানীর স্কুল ছাত্রী শ্রাবনীকে মুক্তিপনের ৬ লাখ টাকা না পেয়ে খুন করা হলো।

ইতিমধ্যে ছিনতাইকারীদের হাতে সুরাটের ইউপি মেম্বর আব্দুর রশিদ ও পুলিশের এসআই মিরাজুল খুনের শিকার হয়েছেন। শহরের চাকলাপাড়া ও সদর উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের আবু সাইদ ও রাকিব নামে দুই যুবক অপহরণের পর নিখোজ রয়েছে।

এদিকে ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া থেকে পৌরসভার সাবেক সচিব আব্দুল কাদেরের ছেলে আবু সাইদকে অপহরণ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। গত বুধবার মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড করতে দোকানে এসে সে আর বাড়ি ফেরেনি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মীর শাখওয়াত হোসেন জানান, পহেলা ডিসেম্বর পান্তাপাড়া গ্রাম থেকে আব্দুর রকিব মুলক নামে এক ব্যক্তিকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। ১৬ দিনেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। রকিব ওই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে।

অপহৃতের মা আলেফা বেগম জানান, ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে তার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। তিনি অভিযোগ করেন জমিজমা নিয়ে তার ছেলের সঙ্গে হরিনাকুন্ডুর রিশখালী গ্রামের আহাদ আলীর বিরোধ ছিল। এই বিরোধের কারণে তার ছেলেকে অপহরণের পর গুম করা হতে পারে। পুলিশ আহাদ আলী ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই অপহরণের রহস্য বের হবে বলে আলেফা বেগম জানান।

এদিকে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, সাধরনত অপহরণের পর অপহৃতের স্বজনরা পুলিশকে তাৎক্ষনিক ভাবে কিছুই জানায় না। বিষয়টি তারা গোপন রেখে অপহৃতদের জীবন রক্ষার চেষ্টা করে। তারপরও পুলিশ খবর পেলে ব্যবস্থা নেয়। তিনি জানান এ পর্যন্ত সব অপহরণ এবং অপহরেণর পর হত্যা মামলার আসামী পুলিশ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরো জানান, সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের ইন্দ্রজিতকে অপহরণের পর জীবিত উদ্ধার করা হয় হরিনাকুণ্ডুর পোলতাডাঙ্গা থেকে।

এ ছাড়া গত শুক্রবার পাওয়া শিশু শ্রাবনী হত্যার মোটিভও পুলিশ উদ্ধার করেছে। আসামীও গ্রেফতার হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান এসআই মেরাজুল হত্যাকারীদেরও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সাধারন মানুষ তার কথার সাথে দ্বিমত পোষন করেন।

সাধারন মানুষের অভিযোগ পুলিশের কর্তব্যে অবহেলা এবং তাদের উদাসিনতার কারনে একের পর এক অপহরণ,খুন আর হত্যার ঘটনা ঘটছে। তাই তারা অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবি জানান যাতে করে এই জঘন্য অপরাধের মাত্রা কমে আসে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহারিয়ার রহমান রকি/ঝিনাইদহ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here