জহিরুর ইসলাম শিবলু।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের পশ্চিম আলেকজান্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন না থাকার কারণে একটি পরিত্যক্ত বরফকলে পাঠদান নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে হচ্ছে শিক্ষকদের। পাঠদানের অনুপযোগী শ্রেনিকক্ষ ও ভবনের কারণে দিন-দিন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান দিতে পারছেন না শিক্ষকরা। এতে করে অনেকটা চিন্তিত ও শস্কিত হয়ে পড়েছেন ঐই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর ভাঙন কবলিত লঞ্চ ঘাট এলাকায় অবস্থিত পশ্চিম আলেকজান্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। যেকোন মুহুর্তে নদী ভাঙনের কবলে পড়ার আশংকা নিয়ে এখানে ক্লাশ করছে কোমলমতি ২৭০ জন শিক্ষার্থী। প্রকৃতিক দুর্যোগের পুর্বাভাস পেলেই ছুটি ঘোষনা করা হয় স্কুল, কেননা এখানে ক্লাশ করা ঝুঁকিপূর্ণ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায়, পশ্চিম আলেকজান্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি লঞ্চ ঘাট থেকে ৩ কি.মি. পশ্চিমে আসলপাড়া গ্রামে ১৯৭১ সালে স্থাপন করা হয়েছিল, যা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরপর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বরফ কারখানায় বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়, বর্তমানে এটি আলেকজান্ডার লঞ্চ ঘাট নামে পরিচিত।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জানান, বর্তমানে মেঘনা নদীর তীরে বিদ্যালয়টি অবস্থিত হওয়াতে সামান্য বাতাসেও শিক্ষার্থীদের মনে ভয় কাজ করে। এছাড়া একটু খানি বৃষ্টি হলেই ক্লাশ করার কোন উপায় থাকে না। সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয়ের সামনে রিক্সা-অটোরিক্সার গ্যারেজে পরিনত হয়েছে। নদী ভাঙন কবলিত অসহায় পরিবারের শিশুদের লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে সুষ্ঠু পরিবেশে অত্র বিদ্যালয়টি দ্রুত স্থানান্তর করা প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা রানী সাহা বলেন, বিদ্যালয়ের পরিবেশ খুবই খারাপ হওয়া সর্ত্বেও বাধ্য হয়ে বরফকলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যালয় সংলগ্ন লঞ্চ ঘাট হওয়াতে প্রায় সবসময়ই মানুষের সমাগত থাকে, যাতে করে কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, পশ্চিম আলেকজান্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একাডেমিক ভবন না থাকায় বর্তমানে অস্থায়ীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানের প্রক্রিয়া চলছে।