ডেস্ক রিপোর্টঃঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় পুরোনো সড়ক সংস্কার কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সিডিউল বহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের পুরাতন ছয়ানী এলাকার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি না থাকায় এমন অনিয়ম করে যাচ্ছে ঠিকাদার। আর অনিয়মের অভিযোগ করায় এলাকাবাসী উল্টো চাঁদাবাজির মামলার হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। আর নিম্নমানের ম্যাকাডম ঢাকতে পানি ঢালছে শ্রমিকরা।

আবু তাহের নামের এক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে সড়কটি তৈরি করা হয়। প্রায় ২৬ বছর পর এখন মেরামত করা হচ্ছে। কাজ শুরু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। কিন্তু আগের থেকে বর্তমানে রাস্তাটি ছোট হয়ে গেছে এবং মান খুব খারাপ। খালি গাড়ি চলাচল করতে গিয়ে ম্যাকাডম মিশে যাচ্ছে।

 

স্থানীয় দোকানদার জহিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১৫ দিন ধরে রাস্তার কাজ চলছে। শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম করছেন ঠিকাদার। আমরা চেয়ারম্যান ও সাপ্লায়ারকে বিষয়টি জানিয়েছি। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজের মান ভালোর জন্য অনুরোধ করেছি। অথচ সাপ্লায়ার আমাকে চাঁদাবাজ বলেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, যে ইটের কনা ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো রিকশার চাপে মিশে যাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করায় উল্টো আমাদের নানা কথা বলছে ঠিকাদার। ২৬ বছর পর আমাদের এই সড়কের কাজ হচ্ছে। আমরা চাই মালামালের মান যেন ভালো হয়।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পুরাতন ছয়ানী থেকে রামেশ্বপুর পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৬০০ মিটার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান নোমান কনস্ট্রাকশন।

অনিয়মের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ঠিকাদার আমেনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। সিডিউলে যেভাবে আছে সেভাবেই কাজ হচ্ছে। এলাকার মানুষ চাচ্ছে তাদের কাছ থেকে যেন মালামাল কিনি। তাদের কাছ থেকে মালামাল না কেনায় এখন আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। আমি আপনার সঙ্গে দেখা করবো।

ছয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওহিদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করায় এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। ঠিকাদারকে বুঝাতে চাচ্ছে তিনি যেন ভালো মানের মালামাল দিয়ে কাজ করেন। অথচ ঠিকাদার নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করছে এবং চাঁদাবাজির অপবাদ দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার যদি চাঁদা চাওয়ার প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. হাফিজুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। ঠিকদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সড়কের পাশে ইট ভাঙতে বলেছি। আজ আমি সরেজমিনে যাচ্ছি। ঠিকাদার যদি সংশোধন না করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here