আব্দুল খালেক রিয়াদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছে বর্তমান সরকার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে দেশকে ডিজিটালাইজড করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ইতোমধ্যে দেশীয় প্রযুক্তির স্বল্পমূল্যে স্কুল পর্যায়ে ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রদান করা হয়েছে। দেশে অবাধ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বর্তমান সরকার মোবাইল এবং কম্পিউটারের ব্যবহার উৎসাহিত করতে দাম কমিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২.১৫ টার সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল নামে ছাত্রীদের আবাসিক হল উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ছাত্রী হলের ভিত্তিপ্রস-র স’াপন করতে পেরে আমি খুব খুশি। আমার সরকার ছেলে এবং মেয়েদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের হার কমানো, উচ্চ শিক্ষার সুযোগ তৈরী, প্রযুক্তিগত শিক্ষা, শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্য সচেষ্ট। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের শিক্ষার হার ৮০ শতাংশ ছেড়ে গেছে। গত বিএনপির আমলে যেখানে শিক্ষার হার ছিল ৫০ শতাংশ।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যাতে করে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে সে জন্য ‘শিক্ষা সহায়তায় ট্রাস্ট ফাণ্ড’ গঠন করা হয়েছে। এতে বিত্তশালী ব্যক্তিরা এই ফাণ্ডে অর্থদান করলে তাদের কর মওকুফ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া শিখে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। তিনি আরো বলেন, আমি বৃদ্ধ হয়েছি এখন তোমরাই এদেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদেরকে এ দেশের হাল ধরতে হবে। দেশ গড়তে তিনি ছাত্র এবং ছাত্রীদের সমান সুযোগের প্রতি দৃষ্টি দেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে গুনগত মানের শিক্ষা দিতে হবে। আমাদের দেশের স্বাধীনতাকে সবার কাছে অর্থবহ করে তুলতে হবে। তিনি দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে বদ্ধপরিকর।
এ ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে দাম কমানোসহ শেখ হাসিনা তার সরকারের সফলতা তুলে ধরেন।
তিনি বিএনপি সরকারকে সমালোচনা করে বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর ২ হাজার ৪’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করেছি। আরও ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বৃদ্ধি করা হবে। কোন সরকার এটা করতে পারেনি। পারবে কি করে? বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার শুধু সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি আর লুটপাট নিয়ে ব্যস- ছিল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যাতায়াত সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়কে দুটি বাস উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত অবিবাহিত শিক্ষকদের জন্য একটি ডরমেটরী, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাথে কথাবলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন স্টপিস দেওয়ার কথা বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এ সময় সভাস’লে শিক্ষা সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, রাবি প্রোভিসি প্রফেসর মুহম্মদ নুরুল্লাহ প্রমুখ উপসি’ত ছিলেন ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাসের প্রধান গেইট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষক ড. জোহার মাজারে পুস্পস-বক অর্পণ করনে।