রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাসমান বইয়ের দোকান গুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অশ্লীল বই। এ সকল বই ক্রয় করতে সকাল থেকে বিকাল পর্যনত্ম দোকনগুলোতে ভিড় লেগে থাকে। অশ্লীল বইয়ের ক্রেতা বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী। এতে ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের পূর্ব পাশে, বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে, মাদার বখ্‌শ হলের সামনে এ সকল ভাসমান বইয়ের দোকান বসে। এছাড়া স্টেশন বাজার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটের বইয়ের দোকান গুলোর কেনাবেচা শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে। এ সকল ভাসমান বইয়ের দোকান গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি গাইড, ভর্তি শর্ট সাজেশন্স, চাকুরীর বই, স্কুল ও কলেজের সিলেবাস ভিত্তিক বইয়ের পাশাপাশি অবাধে বিক্রি হয় অশ্লীল বই। বইগুলোর মধ্যে ইবলিশনামা, নিষিদ্ধ নারী, মেডিকেল সেক্স গাইড, কীভাবে দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়া যায়, প্রেম বেহেসেত্মর ফল, বিলম্বিত বাসর, প্রেম করার নিয়ম-কানুন উল্লেখযোগ্য। বইয়ের মলাট ছিড়ে সাদা কাগজ লাগিয়ে দিয়ে অসংখ্য যৌন উত্তেজনা মূলক বই বিক্রি করা হয়। অশ্লীল এ বইগুলোর দাম পনের থেকে একশ টাকার মধ্যে। আবার এ বইগুলো প্রতি রাত ২-৫ টাকায় ভাড়ায় পাওয়া যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৎসংলগ্ন এ সকল ভাসমান বইয়ের দোকানগুলোর ক্রেতা অধিকাংশই স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ সকল বই পড়ে খুব অল্প বয়সেই ইচড়ে পাকা হয়ে যাচ্ছে ছেলেরা। এছাড়া বখাটে ছেলে কর্র্তৃক মেয়েদের ইভটিজিংয়ের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছরে প্রায় ৪০ টির ও বেশি ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেছে রাবি ক্যাম্পাসে। ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে অনেক মেয়েরা ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রজীবন সাঙ্গ করে বাড়িতে অলস সময় পার করছে।

বই কিনতে আসা সদ্য ভর্তি হওয়া এক সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশনের সময় এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সহায়িকা, বিসিএস পরীক্ষা, চাকুরী, বিভিন্ন ইংলিশ স্পোকেন গাইডসহ কিছু উন্নত মানের বই পাওয়া যেত। কিন্তু এখন দেখছি এ দোকানগুলোতে অশ্লীল বইয়ে ছেয়ে গেছে। এটা আমার কাছে খুব খারাপ লাগছে।

অন্য ক্রেতা জানান, বই কিনতে এসে যে সকল অশ্লীল বই সামনে রেখে দিয়েছে তা দেখে আমার মাথা ঘুরে গেছে। এতবড় বিদ্যাপীঠে এ ধরনের বই বিক্রি হলে সরকার যে ইভটিজিং বন্ধের চেষ্টা করছে তা শুধু চেষ্টাই থেকে যাবে। তিনি এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হসত্মক্ষেপ কামনা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকান মালিক বলেন, বিভিন্ন চাকুরীর বই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি গাইড এবং স্কুল কলেজের বইয়ের পাশাপাশি এ সকল বইগুলোর ক্রেতা অনেক বেশি। চাহিদা বেশি থাকায় আমরা এ গুলো নিয়ে আসি। অনেকে আবার এ সকল বই আনার জন্য আগাম বায়না দিয়ে থাকে। বইগুলো চটি চটি হওয়ায় আমাদের লাভ বেশি হয়।

আব্দুল খালেক রিয়াদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here