রবীন্দ্র নাথ পাল, ময়মনসিংহ থেকে :: ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজে হোস্টেলে সিট বরাদ্দে অনিয়ম, শিক্ষার্থীকে মারধর এবং নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগে অধ্যক্ষ ও হাউস কীপারের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ দুুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।
শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে হল ত্যাগে অস্বীকৃতি জানায়। এদিকে বিকেলে ছাত্রীদের হল থেকে বের করতে পুলিশ ছাত্রীদের হলে ঢুকে বেধরক লাঠিচার্জ করে। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়। গুরুতর আহত ৫জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা জানায়, হাস্টেলে সিট বরাদ্দ নিয়ে ঝামেলা হলে গত ১৮ তারিখ হাউস কীপার মিসেস নাজমুন্নাহার বিএসসি কোর্সের তিন ছাত্রীকে মারধর করে।
বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানোর পরও সমাধান না হওয়ায় অধ্যক্ষ ও হাউস কীপারের পদত্যাগের দাবীতে গত রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচী শুরু করে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দ্বিতীয় দিনে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কলেজে দেড় ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচী পালন করে হলে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষনা দিয়ে বেলা ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে হলে অবস্থানের ঘোষনা দিলে পুলিশ প্রথমে ছাত্রদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।
পরে বিকেলে মহিলা পুলিশের সদস্যরা ছাত্রীদের হলে ঢুকে বেধরক লাঠিচার্জ করে ছাত্রীদের হল থেকে বের করা চেষ্টা চালায়। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়। গুরুতর আহত ৫জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে লাঠিচার্জের পরও হল ছাড়েনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নেতা মো. রাসেল, তফাজ্জল হোসেন ও সেজুতি জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচী শেষে আমরা হলে ফিরে যাওয়ার পর সম্পুর্ন অযৌক্তিভাবে কলেজ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
হলের ছাত্রীদের ব্যাপক মারধর করেছে পুলিশ। অধ্যক্ষ মনোয়ারা বেগম এবং হাউস কীপার নাজমুন্নাহার অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত অন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।এদিকে ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মিসেস মনোয়ারা বেগম জানান, শিক্ষার্থীদের অন্যায় আন্দোলনের কারনে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আনিদিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
ছাত্রীদের দুপুর ২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলেও তারা না যাওয়ায় পুলিশের সাহায্য নেয়া হয়েছে। হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত অবশ্যই মানতে হবে। এদিকে তিনি শিক্ষার্থীদের আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে কর্মরত কোতোয়ালী মডেল থানার এক উপ-পরিদর্শক জানান, কলেজ কৃর্তপক্ষের অনুরোধে মহিলা পুলিশের সদস্যরা ছাত্রীদের হল থেকে বের করার চেষ্টা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।