আবু হোসাইন সুমন, মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ::
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রায় লবণ পানি প্রজাতির কুমির পিলপিলের দেয়া ডিম হতে ৩৮ বাচ্চা ফুটে বেরিয়েছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে ডিমের খোলস ভেঙ্গে জন্ম নেয় নতুন এ বাচ্চাগুলো। 
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির জানান, গত ১লা জুন প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে ৩৮টি ডিম দেয় কুমির পিলপিল। এরপর ডিমগুলো পুকুর পাড়ের কুমিরের ডিম পাড়ার বাসা থেকে তা সংগ্রহ করে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। ইনকিউবেটরে থাকার দীর্ঘ ৮৩ দিনের মাথায় সোমবার সেই ৩৮টি ডিম থেকেই ৩৮ টি বাচ্চা ফুটে বের হয়েছে। এ বাচ্চাগুলো প্রজনন কেন্দ্রের নির্দিষ্ট প্যানে রাখা হয়েছে।
এবারই প্রথম করমজলে কুমিরের ডিমে শতভাগ বাচ্চা ফুটেছে। এর আগে সর্বশেষ ২০০০ সালে পিলপিলের দেয়া ৪৬টি ডিমের মধ্য থেকে সেবার মাত্র ৪টি বাচ্চা ফুটে ছিলো। আর ২০২১ সালে কোন ডিমই দেইনি পিলপিল। পূর্বের ছোট-বড় ৯১টি আর সোমবারের নতুন ৩৮টি বাচ্চা নিয়ে এ প্রজনন কেন্দ্রে মোট কুমিরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৯টিতে। আর পিলপিল এবার নিয়ে ১১ বার ডিম দিয়েছে।
বন কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির বলেন, এবার প্রথম কুমিরের ডিমে শতভাগ বাচ্চা ফুটেছে। কারণ এর আগে এনালগ পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ করা হতো, কিন্তু চলতি বছর ডিজিটাল ইনকিউবেটরে ডিম সংরক্ষণ করায় ৩৮টি ডিমে ৩৮টিই বাচ্চা ফুটেছে।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে করমজলে ৮ একর জমির উপর এ কুমির প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলে বনবিভাগ। মুলত বিলুপ্ত প্রায় লবণ পানি প্রজাতির এ কুমিরের সংরক্ষণ, প্রজনন ও বংশ বিস্তারের লক্ষেই কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছিলো। তখন রেমিও ও জুলিয়েট দিয়ে শুরু হয়েছিলো এ প্রজনন কেন্দ্রের প্রথম কার্যক্রম। বর্তমানে রোমিও ও জুলিয়েট বয়স্ক এবং দুর্বল হয়ে পড়ায় ডিম দেয়া বন্ধ হয়ে গেছে তাদের। এখন একমাত্র পিলপিলই রয়েছে ডিম দেয়ার মতো।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here