বুড়িগঙ্গাসুলতান মাহমুদ আরিফ :: পুরান ঢাকা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে উঠে “সদর ঘাট” এর দৃশ্য। বইয়ের পাতায় আজো সুন্দর করে লেখা আছে “ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত” । ঢাকার সাথে যেন এক অনুপম সৌরভ ছড়ানো সম্পর্ক জুড়ে আছে এই বুড়িগঙ্গা নদীর।

বর্তমান সময়ে বুড়িগঙ্গার মাঝে মাছের কোন নিদর্শন খোঁজ করে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। তবে, আল্লাহ তা’য়ালা বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সহায় সম্বলহীন লোকদের রিজিকের ব্যবস্থা। নদী পারা-পারে মাঝিরা তাদের জীবিকার জন্য ব্যবস্থা করেছেন নৌকার।

কেরানীগঞ্জ এবং ঢাকার যাওয়া -আসার অন্যতম মাধ্যম বুড়িগঙ্গা হয়ে। প্রতিবার এপার থেকে ওপার পার হতে মাঝিরা নিচ্ছে ৫ টাকা করে। মানুষের আসা-যাওযার ভীড়ে মাঝিরাও হচ্ছে কিছুটা সচ্ছল ।

বুড়িগঙ্গাসর্বদা বুড়িগঙ্গা ভ্রমণে দেশের উন্নত এলাকার লোকদের আগমণের সাথে সাথে বাড়ছে বিদেশীদের ও ভীড়। বিকালের মিষ্টি বাতাস আর সামান্য ঢেউয়ের তালে নদী ভ্রমণে আনন্দ ফিরে পান, ইট -পাথরে ঘেরা মানুষগুলোর অন্তরে। দেশি- বিদেশী লোকদের উপস্থিতি সর্বদা চোখে পড়ার মত বুড়িগঙ্গাময় এলাকাতে।

দেশের অর্থনৈতিক আয়ের বড় একটা অংশ আসে জলপথ থেকে। বুড়িগঙ্গা পাড় ঘেঁসলেই চোখে পড়বে ছোট-বড় অনেক লঞ্চ। দেশের বৃহত্তম লঞ্চ ঘাট এখানেই। মানুষ আনন্দ কিংবা সড়কের নিরাপত্তার অভাবে বেশির ভাগ সময় লঞ্চেই ভ্রমণ করেন।

লঞ্চ ভ্রমণের আনন্দ কারো কাছে অজানা নয়। স্বল্প খরচে অনেক পথ পাড়ি দেওয়া যায় লঞ্চে। বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁসে আছে অনেকগুলো ঘাট। এই ঘাটগুলোও সর্বদা ভীড় থাকে রিকসা, অটো রিক্সা এবং ট্রাক- ট্রাক্টর এর উপস্থিতিতে। বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় সর্বদা ব্যবসায়ীকদের আগমণ হয় বুড়িগঙ্গা তীর ঘেঁসে বিভিন্ন বাণিজ্যিক এলাকায়।

বুড়িগঙ্গালঞ্চে করে আসা যাত্রীদের বাস পর্যন্ত কিংবা গন্তব্য স্থানে পৌঁছানোর জন্য রিকসা এবং অটো রিক্সার সর্বদা উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আইন শৃঙ্খলারও যথেষ্ঠ কার্যকারিতা প্রদর্শন হয় অত্র ঘাটগুলোতে। প্রশাসনের সর্বদা উপস্থিতি সত্ত্বেও এত লোকের ভীড়ে ছিনতাইকারীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না যাত্রী কিংবা পর্যটকবৃন্দ। সব সময় ছিনতাইকারীর আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় সদর ঘাট এলাকাতে। সড়কের মত বুড়িগঙ্গা পারা-পারে নৌকার মাঝিদের প্রতিযোগিতা পূর্ণ মনোভাবের কারণে হারাতে হচ্ছে মানুষের জীবনও!

ছিনতাইকারী এবং নৌকার মাঝিদের এহেন মনোভাব নিরসনে প্রশাসনের আরো কঠোর হতে হবে। দেশের সকল সম্পদ হোক জনগণের কল্যাণে। জনগণ ভোগ করবে সীমাবদ্ধতার জায়গা থেকে, স্বাধীনভাবে নিজ অধিকারে। সরকারই সেই ব্যবস্থাপনা করার প্রয়াসে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে বলে বুড়িগঙ্গাময় জনগনের বিশ্বাস।

 

 

 

লেখকঃ অনার্স ৩য় বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা। 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here