নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় লেখা:

ইউনাইটেড নিউজ ডেস্ক: বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীদের হয়রানি অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞা ও নানা মহল থেকে চাপ আসতে পারে। এজন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারকর্মীদের হয়রানি বন্ধ এবং গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কাজ করা শেখ হাসিনার জন্য অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। আর চলমান সঙ্কটের দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরই বর্তায়।

বুধবার মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে পলিটিক্যাল ক্রাইসিস ইন বাংলাদেশশিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এমন মন্তব্যই করা হয়েছে।

সম্পাদকীয়র শুরুতে বিরোধী দলের একের পর এক হরতালের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিক হরতালে বাংলাদেশ অচল হয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষের সহিংস সংঘাতে শত শত লোক মারা গেছে। বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা ও মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ার আদর্শকে পাশ কাটিয়ে আদালতগুলো অনেককে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

উদ্ভূত সঙ্কটের দায় এখন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরই বর্তায় বলে উল্লেখ করে আরো বলা হয়েছে, বিরোধী দলগুলোকে যে কোনো মূল্যে নিষ্ক্রিয় রাখতে এবং আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান পর্যন্ত ক্ষমতা নিজের কবজায় রাখতে শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। ২০১১ সালে হাসিনা সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেন। এখন তিনি তার নেতৃত্বাধীন একটি ‘সর্বদলীয় সরকার’ গঠন করেছেন। এ বিষয়টি প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মেনে নেননি।

এর মধ্যে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে উচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সমর্থক এমন অনেক বাংলাদেশি মনে করেন, জামায়াত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তির জন্য হুমকি। তবে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত জামায়াতের হতাশ কর্মী-সমর্থকদের রাজপথে ঠেলে দিচ্ছে।

একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরকারি দলের প্রভাব বিস্তারের বিষয়েও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে। বলা হয়েছে,  একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে বেছে বেছে বিরোধী নেতাদের বিচার করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালকে সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অস্ত্র হিসেবেই ব্যবহার করছে বলে মনে হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here