ডেস্ক রিপোর্ট: : আমাদের অভিমান, অনুরাগ সমস্তই জমা হয় প্রিয়জনের নামে। সম্পর্কে প্রাধান্য বেশি থাকে বলে ভুল বোঝাবুঝির ভয়টাও থাকে বেশি। বিশেষ করে দুইজন দুই জায়গায় থাকলে ভুল বোঝাবুঝির মাত্রাটা যেন বেড়ে যায়।

সম্পর্ক থাকলে সেখানে মান অভিমান, কথা কাটাকাটি হবেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আবার তা মিটেও যাবে। কিন্তু প্রতিটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার খুব বেশি দেখা যায়। তা হল ভুল বোঝাবুঝি।

স্বভাবগতভাবেই একজন ব্যক্তি অন্যজনের থেকে আলাদা। সবার চিন্তা-চেতনাও আলাদা হয়। সামাজিকতার খাতিরেই দুজন মানুষ একই বন্ধনে বাঁধা পড়ে একসঙ্গে পথচলা শুরু করেন। এই সম্পর্কে থাকাকালীন দুজনের মধ্যে মত, চিন্তাধারা নাও মিলতে পারে। এর ফলে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝিরও সৃষ্টি হতে পারে।

কাছে থাকলে একটুখানি ঠোঁটের হাসিতে, চোখের চাহনিতে যে কথা বোঝানো যায়, দূরে থাকলে তা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর তাইতো একটি ইতিবাচক বিষয়ও নেতিবাচক হতে সময় লাগে না। কিন্তু এই ভুল বোঝাবুঝিকে বাড়তে দিলেই মুশকিল। সেখান থেকে জন্ম নিতে পারে আরো বড় দূরত্বের।

সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে তাকে দূর করার প্রচেষ্টাও। আর সেক্ষেত্রে যত্নশীল হতে হবে উভয়পক্ষকেই।

একে অপরকে দোষারোপ নয়: সম্পর্কে একটু আধটু ঝগড়া হতেই পারে। তাই বলে একে অপরকে এই নিয়ে দোষাদোষী করলে দুজনের মনেই বিরূপ ধারণার জন্ম হবে। এতে করে ভুল বোঝাবুঝির পরিমাণও বেড়ে যাবে এবং সম্পর্কে ফাটল ধরার সম্ভাবনা থাকবে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তাই কখনই একে অপরকে দোষারোপ করবেন না।

সঙ্গীর কথা গুরুত্ব দিয়ে না শোনা: সঙ্গী যখন কোনো কথা বলেন সেটা যতোই তুচ্ছ হোক না কেন তা মনোযোগ সহকারে শোনা উচিৎ। নতুবা সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। আপনার সঙ্গী আপনাকে কোনো কথা বলতে চাচ্ছেন সেটা আপনার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও হতে পারে তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঙ্গীর কথা একটু গুরুত্ব দিয়ে শুনুন।

সময় দেয়া: না, এই সময় দেয়া মানে কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিকে বাড়তে সময় দেয়া নয়, পরস্পরকে সময় দেয়া। যখন দূরে থেকে আর সমস্যার সমাধান করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না তখন কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করুন। একটি দিন বা অন্তত একটি বিকেল পরস্পরকে সময় দিন। প্রিয় মানুষের চোখের দিকে তাকালে আর কোনো মিথ্যাই পাত্তা পাবে না। ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়ে প্রতিষ্ঠা হবে ভালোবাসার

অনুমান যাচাই করা: অনুমানের উপর ভিত্তি করে কোনো বিষয়ে জোর দিয়ে কথা না বলাই ভালো। এতে ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। অনুমিত বিষয়টি অসত্যও হতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলে পরিষ্কার হওয়াই ভালো।

মতের অমিল হলে না আগানো: মানুষ দুজন, তাই মতামতও দুটোই আসবে। দুজনকেই বুঝতে হবে আপনার সঙ্গী স্বতন্ত্র মানুষ, তাই তার ধারণাটাও আলাদা। তার মানে এই নয় যে সঙ্গীর মতামত বা সিদ্ধান্তটা ভুল। আপনাকে বিষয়টি সঙ্গীর দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতে হবে। মানুষ যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যায় তখন সেখানে আবেগ চলে আসে। এ কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় দুজনের আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা করতে হবে। পরবর্তীতে যেন আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয় সেজন্য সম্ভব হলে বিষয়টি নিয়ে আর আলোচনা করবেন না।

সঙ্গীর সক্ষমতা দিক নিয়ে ভাবা: একসঙ্গে পথচলার ফলে একে অন্যের ভালো-মন্দের ও সক্ষমতা-দুর্বলতার দিকগুলো জানা হয়ে যায়। সঙ্গীর ভালো গুণগুলো সব সময় মাথায় রাখতে হবে। সবসময় সঙ্গীর ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার ফলে ভুল বোঝাবুঝি হয়। এ কারণে সঙ্গীর দুর্বল দিকগুলোর সমালোচনা না করে তার ভালো গুণগুলোর প্রশংসা করতে হবে।

আলোচনার জন্য এগিয়ে যাওয়া: ভুল বোঝাবুঝি হলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করতে হবে। ভুলটা তার, সমাধানের জন্য আমি কেন আগ বাড়িয়ে যাবো- এ ধরনের অহমিকা ত্যাগ করুন। দুজনই চুপ থাকলে বিষয়টি আরো ঘোলাটে হবে। এ কারণে নিজেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য এগিয়ে গিয়ে সঙ্গীকে অবাক করে দিন। কোনো রকম দোষারোপ না করে ঠান্ডা মাথায় আলোচনা করুন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here