াি যয
বান্দরবান-রুমা সড়কের ফারুকমুন পাড়ায় বিপজ্জনক বেইলি সেতু এবং একই সড়কের খুমিঘটা এলাকার তক্ত-বেলি সেতু। এসড়কের ওয়াইজংশনেন পরে বিপজ্জনক সড়কপথের দৃশ্য।

এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: বিধস্ত সড়কপথের সংস্কার বা মেরামতের জন্য বহুবার তাগাদা দেয়া সত্বেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মত নির্বিকার রয়েছে। ফলে বান্দরবান জেলা শহরের হাফেজঘোনা এলাকাসহ ৪৮ কিমি দীর্ঘ পুরো রুমা সড়কপথটি যাত্রীদের জন্যে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ মরণদশাগ্রস্ত সড়কপথের নানাস্থানে প্রতিদিনই ঘটছে ঘটনা-দুর্ঘটনা। এ বিধস্ত সড়কপথ ব্যবহার করতে গিয়ে মুমুর্ষ রোগীরা আধামরা বনে যাচ্ছেন।

সওজ বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ২০ইসিবির রজস্যজনক নীরবতা শান্তিপ্রিয় পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীসাধারণকে চরম হতাশা করে তুলেছে। দায়িত্ব জ্ঞানহীন এ দুটি সরকারি সংস্থার প্রতি মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে প্রতিনিয়তই বিধস্ত সড়কপথের ন্যুনতম হলেও সংস্কার না করায়।

এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সম্প্রতি সওজ ও ২০ইসিবির সদস্যরা সড়কের পরিমাপ করার পরও সংস্কার কাজ শুরু করা হয়নি, সামনে বর্ষাও আসন্ন। বর্ষার আগেই এ সড়কপথের সংস্কার কাজ না করা হলে সংকট আরও ঘনীভুত হওয়ার আশংকা বিরাজ করছে।
জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে অসংস্কার ও অবহেলিত অবস্থায় ফেলে রাখায় সাম্প্রতিক বর্ষণে বান্দরবান জেলা শহরের প্রধান ডাকঘর থেকে হাফেজঘোনা এলাকার অংশে বান্দরবান-ওয়াইজংশন সড়কের প্রায় এক কিমি সড়ক জুড়েই সৃষ্টি হয় ব্যাপকভাবে খানা-খন্দক। যা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে যাত্রীদের জন্যে।

সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়নের(বর্তমান ২০ইসিবি)নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ সড়কের সংস্কার কাজে হাত দিতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ,জানিয়েছেন পৌরসভার কর্মকর্তারা।এ সড়কের ওই এলাকায় প্রতিদিনই ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ঘটা ছাড়াও যাত্রীরা চরমভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষ রোগী ও গর্ভবতি মায়েরা যানবাহনে যাতায়াত ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি- সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ২০ইসিবি বান্দরবান-ওয়াইজংশন-চিম্বুক এবং বান্দরবান-রুমা সড়কের সংস্কার কাজ করতে পারছেনা প্রয়োজন তহবিল বরাদ্দ না থাকায়। বিষয়টি নিয়ে খোদ পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর সরকারের উচ্চ মহলে যোগাযোগ করেছেন,তাঁকে জানানো হয়- আগামী একমাসের মধ্যেই এ সড়কপথের মেরামত কাজ শুরু করা হবে। গত বর্ষায় এ সড়কের রোয়াংছড়ি উপজেলা অংশের খুমিপাড়া

এলাকায় আস্ত পাহাড়ের অংশ ধনে পড়ে সরকারি কর্মকর্তাসহ ৭জন যাত্রী মর্মান্তিকভাবে নিহত হন। সেই সময় বান্দরবান-রুমা সড়কের নানাস্থানে বিশাল বিশাল পাহাড়ের অংশ ধসে পড়ে দফায় দফায় যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকে।

জেলা শহরের হাফেজঘোনা এলাকার মরিয়ম বেগম,কামাল উদ্দিন এবং সালাম বলেন,শহরের হাফেজঘোনা এলাকার মাত্র সিকি কিলোমিটার সড়কপথ সংস্কারবিহীন পড়ে থাকায় রোগী ও গর্ভবতি মায়েদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। চরম কষ্টের বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তারা জানার পরও কী কারণে নির্বিকার রয়েছে কর্তৃপক্ষ থেকে তার কোন জবাবও মিলছে না।

এখনও পর্যন্ত বান্দরবান-রুমা সড়কের পুনরায় সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় জেলা সদর থেকে রুমা উপজেলা সদর পর্যন্ত ৪৮ কিমি সড়কপথ যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ক্রমেই বিপর্যয় নেমে আসছে,অযোগ্য হয়ে পড়ছে সড়কপথ। বর্তমানে এ ক্ষত-বিক্ষত সড়কপথ ব্যবহার করতে গিয়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির সম্মুখিন হতে হচ্ছে।

বান্দরবান-রুমা সড়কটিই হচ্ছে জেলার শীর্ষ পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একমাত্র যাতায়াত মাধ্যম। এ সড়কের ফারুকপাড়া, লাইমীপাড়া এবং খুমিপাড়া এলাকা পর্যন্ত ২৪টি বেইলি সেতু, আধাবেইলি ও তক্তা-বেইলি সেতুর করুণদশা বিরাজ করছে। এসব সেতুর পাতাটন ভেংগে সেগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে মহাবিপজ্জনক অবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে।

এ সড়কে চলাচলকারী বাস ও জিপ চালকরা বলছেন, বান্দরবান শহর ও সদর উপজেলা অংশে ক্ষত-বিক্ষত সড়কপথ এলাকার মেরামত না করে রুমা উপজেলার উজানে বগালেক সড়ক নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয়ে মহাব্যস্থ সময় কাটানোয় প্রশ্নবিদ্ধ। সড়ক কর্তৃপক্ষ সড়কের গোড়ার দিকে যানচলাচল উপযোগী করার কোন উদ্যোগই গ্রহণ করছে না।

মৃত্তিকা বিভাগের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরোপুরি অপরিকল্পিত এবং প্রকৌশলগত প্রযুক্তি ব্যবহার ছাড়াই বান্দরবান-ওয়াইজংশণ এবং রুমা সড়কের কাজ যেনতেনভাবেই চলতে থাকায় সড়কের নানাস্থানে খানা-খন্দকে ভরে গেছে এবং আস্তপাহাড়ের অংশ ধসে পড়ছে দফায় দফায়। সামান্য বৃষ্টিতেই এ সড়কপথে পাহাড়ের অংশ ধসেপড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে। ধসেপড়া মাটি অপসারণ করার পরও ধসেপাড়া অব্যাহত থাকছে।

ফলে যাত্রীসাধারণ ছাড়াও এলাকায় বিরাজ করছে জনদুর্ভোগ। শীতের এই শুস্ক মৌসুমেও কর্র্তৃপক্ষ মরণদশাগ্রস্ত এ সড়কপথ সংস্কারে হাত দিচ্ছে না।

এ প্রসংগে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির কারণে বিধস্ত বা খানা-খন্দকেভরা সড়কপথের সংস্কার কাজ করা যায়নি,তবে তহবিল পেলে অচিরেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here