ডেস্ক নিউজ :: শুক্রবার সকালে তখনো ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট জেসিন্ডা আর্ডান। মাথা থেকে পা পর্যন্ত লম্বা কালো পোশাকে ঢাকা।
জেসিন্ডাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা গেলেন হাসপাতালে আহতদের দেখতে। এই নিয়ে সাতদিনে তৃতীয়বারের মতো তিনি আহতদের দেখতে গেলেন। তারপর যোগ দিলেন ক্রাইস্টচার্চ মসজিদ এলাকায় সমবেত জনতার সাথে। সেখানে সবার সাথে নিহতদের স্মরণ করে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এভাবেই বিগত এক সপ্তাহ ধরে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। হামলার পর পুরো নিউজিল্যান্ডবাসী ভেঙে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সবার মনোবল যোগাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই দেশটির অস্ত্র আইনে পরিবর্তন ও অসাধারণ মানবতা প্রদর্শনের জন্য নিজ দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছেন।
একটি দেশে এরকম নৃশংস হামলা শেষে দেশটির সরকার প্রধানের সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জেসিন্ডা বিশ্ববাসীকে সমালোচনা করার সুযোগ দিলেন কই? উল্টো কুড়িয়ে নিচ্ছেন প্রশংসা। হামলাকারীর নাম মুখে না নেওয়ার ঘোষণা থেকে শুরু করে নিহত পরিবার ও তাদের ধর্ম ইসলামের সম্মান প্রদর্শন করায় তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অনেক উঁচুতে।
মাত্র দুই দিন আগে নিউজিল্যান্ডের এক স্কুল শিক্ষার্থী তাকে জিজ্ঞাসা করলো, প্রধানমন্ত্রী আপনি কেমন আছেন। জেসিন্ডা আর্ডান সরলভাবে উত্তর দিলেন, আমি ব্যথিত। এছাড়া ১৩ বছর বয়সী এক মুসলিম বালিকার চিঠির উত্তর দিতেও ভুল করেননি ৩৮ বছর বয়সী এ প্রধানমন্ত্রী।
বালিকার চিঠির জবাবে জেসিন্ডা বলেন, ‘আমি মনে করছি না আমি আমার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছি। আমি মানুষ হয়ে মানবতার সেবায় কাজ করছি।’
এছাড়া তিনি নিহতদের স্মরণ করতে গিয়ে জেসিন্ডা বলেন, ‘আমি নিউজিল্যান্ডবাসীর মূল্যবোধের বাহক হয়ে কাজ করছি। আমরা বর্তমানে যেটা অনুভব করছি সেটাই প্রদর্শন করছি।’
তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড এমন একটি দেশ যেখানে শত্রুতার চাষ করা হয় না। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি সন্ত্রাসের কোন সীমানা প্রাচীর নেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক হতে হবে। নেতৃত্ব তৈরি করে কাজ করতে হবে।’
এদিকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। এক টুইট বার্তায় এই হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এমনটাই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
টুইট বার্তায় একটি বন্দুকের ছবিসহ লেখা ছিল, ‘এরপর আপনি’। এই টুইট বার্তা নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। যেখানে নিউজিল্যান্ডের পুলিশকেও ট্যাগ করা হয়েছে।
তবে ইতোমধ্যেই টুইট অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই টুইটার অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী কথাবার্তা লেখা ছিল বলেও দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।