কম্পিউটার

সারোয়ার মিরন :: গতো বছরের শেষ দিকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ পেয়েও এমপিওভুক্ত (মান্থলি পে অর্ডার) হতে পারছেন না ৩৪৫ জন কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। গত ডিসেম্বরে ২০ তারিখে মেধা তালিকার ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ এবং ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য সুপারিশপত্র ইসু করে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন এবং প্রত্যয়ন অথরিটি (এনটিআরসিএ)।

উক্ত সুপারিশের আলোকে সারাদেশে ৩৪৫ জন শিক্ষক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। যোগদান করে পাঠদান প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার তিন মাস সময় পার হলেও বেতনহীন পাঠদান করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। যাবতীয় শর্তাদি পুরন করতঃ সকল নিয়ম নীতি মেনে যোগদান করার পরে বেতন ভাতার সরকারি অংশের জন্য (এমপিওভুক্তি) বিবেচিত হচ্ছেন না নিয়োগ প্রাপ্ত এ সকল শিক্ষক।

ফলে বেতন ভাতাহীন থেকে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। পাচ্ছেন না প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ভাতাও। উল্টো কর্মক্ষেত্রে যাতায়াত বাবদ ব্যয় করছেন ধার কর্জ করে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে এনটিআরসিএ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইরিকুইজিশনের মাধ্যমে নিবন্ধনধারীদের নিকট থেকে আবেদন গ্রহন করেন। সহকারী শিক্ষক কম্পিউটারের জন্য যোগ্যতা ছিলো ছয় মাস মেয়াদি ডিপ্লোমা প্রশিক্ষন৷ এ যোগ্যতায় আবেদন প্রক্রিয়া দু দিন চলার পর হঠাত্ করেই কোন ধরনের পুর্ব ঘোষনা ছাড়াই উক্ত যোগ্যতা বাতিল করে আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। ভুক্তভোগি কয়েকজন নিয়োগ প্রত্যাশী তাত্ক্ষণিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রনের সুযোগ চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে দুটি রীট পিটিশন দাখিল করেন (রীট নং ৯৭৭৭/২০১৬ এবং ৯৭৯০/২০১৬)।

এরই প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে শুধুমাত্র কম্পিউটার বিষয়ের আবদনের জন্য অতিরিক্ত ছয় দিন সময় বৃদ্ধি করে এনটিআরসিএ। রীট পিটশনটি আদালতে চলমান থাকায় শুধুমাত্র কম্পিউটার বিষয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে অন্যান্য বিষয়ের সকল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রায় তিন বছর পরে আপিল বিভাগ হয়ে রীট পিটিশনটি নিয়োগ প্রত্যাশীদের পক্ষে রায় হয়ে নিষ্পত্তি হলে কম্পিউটার বিষয়ের ফলাফল প্রকাশ করে ১০৪৮ জনের বিপরীতে সুপারিশপত্র ইসু করা হয়। এনটিআরসিএ কর্তৃক ইসুকৃত সুপারিশকালীন নোটিশে ২০১৬ সালের গণবিজ্ঞপ্তি কালীন সময়ে বিধি বিধান মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৪৫ জন যোগদান করেন।

মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগন ২০১৮ সালের নীতিমালার (এখনো বাস্তবায়ন শুরু হয়নি) অযুহাতে এমপিওভুক্তিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। গত মার্চ মাসের এমপিওতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হলেও অবশিষ্ট প্রায় ৩৪০ জন কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না মাউশি’র খামখেয়ালিপনায়।

ফলশ্রুতিতে বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। ভুক্তভোগি শিক্ষকদের দাবি মাউশি কর্তৃক এমপিওভুক্তির জন্য একটি স্পষ্টকরন চিটি ইস্যুর মাধ্যমে বকেয়া বেতনসহ দ্রুত এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।

 

 

 

লেখক: সারোয়ার মিরন, রামগতি পৌরসভা, রামগতি, লক্ষ্মীপুর। ইমেইল: sarwarmiran87@gmail.com

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here