নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছীতে মাত্র তিন শতক জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় তিন জন নিহত হয়। এ ঘটনায় থানায় ২৪জনের নাম উল্লেখসহ আজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে নিহতের পরিবার।

মামলা দায়ের পর পুলিশ মাত্র ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এ দিকে এক মাস পার হলেও মূল আসামীসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতারের করেতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের কোন তৎপর না থাকায় সুযোগে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে অসহায় পরিবার বাদি ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে।

অপরদিকে শোকাহত পরিবার ও বাদীকে আসামীদের তথ্য দিতে পুলিশ চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে তারা এখন আতঙ্কে বসবাস করছে ও নায্য বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এ দিকে পুলিশ প্রশাসন দাবি করেছে আসামীদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের উজালপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম দুলু ও তার প্রতিবেশী হাসানের সাথে ২০০৮ সাল থেকে মাত্র তিন শতক জমি জমা সংক্রা্তের জের শুরু হয়। গত মাসে ৬ জুন শুক্রবার বিকেলে জমির ভাগ বাটাটোয়ারা নিয়ে বৈঠক বসে। এসময় বাকবিতন্ডার এক পর্যায় হাসানের লোকজন লাঠি সোডা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে শহীদুল ইসলাম ও তার আত্নীয় আব্দুল ওয়াদুদ ও আমজাদ হোসেন গুরুত্বর আহত করে। পরে তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় নওগাঁ হাসপাতালে শহীদুল ইসলাম ও পরদিন রাজশাহী হাসপাতালে আমজাদ হোসেন ও ওয়াদুদ মারা যান।

নিহত আমজাদ হোসেনের স্ত্রী নাজমা পারভিন, নিহত ওয়াদুদ হোসেনের মা নাজমা, নিহত শহিদুল ইসলাম দুলুর নিরব হোসেন, রবিউল ইসলাম জানান, হত্যাকান্ডের এক মাস পার হতে চললেও মাত্র ৩ জন আসামী ছাড়া মামলার মূল আসামীসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ ও হুমকি দিয়ে আসছে। এতে তারা এখন আতঙ্কে বসবাস করছেন। অপরদিকে আসামীদের তথ্য দিতে পুলিশ ও পুলিশের সোর্স চাপ দিচ্ছে।

নিহত শহিদুল ইসলাম দুলুর স্ত্রী জান্নাতু ফেরদৌস জানান, পরিবারের এক মাত্র অর্থ উপার্জনকারীকে হারিয়ে অসহায় পরিবারগুলো শিশু সনত্মান নিয়ে আগামীতে কি ভাবে পরিজন নিয়ে বাঁচবেন তাই নিয়েই দুশ্চিন্তাই হয়েছেন। সরকার থেকে কোন রকম খোঁজ নেয়া হয়নি।

এলাকাবাসি অসিম কুমার ও ইউসুফ আলী জানান, এ নির্মম হত্যার আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় হত্যাকারীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে হত্যাকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসিসহ এলাকাবাসি।

নিহত শহিদুল ইসলামের ছেলে ও মামলার বাদি ফরহাদ হোসেন জানান, হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের সহযোগিতায় একজন ও গত কয়েক দিন আগে দুই জন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারলেও পুলিশ নিরব ভ্থমিকা পালন করছে।

নওগাঁ পুলিশ সুপার কাইয়ুমুজ্জামান খাঁন জানান, হত্যাকান্ডের মামলায়র বাঁকি আসামীরা দ্রুত স্থান এক স্থান থেকে অন্য স্থান পরিবর্তন করার তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। অপর প্রশ্নে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হত্যাকারীদের তথ্য দিতে বাদিদের কোন রকম চাপ দেয়া হয়নি।

তন্ময় ভৌমিক/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here