মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের সংঘর্ষে সময় সংবাদ সংগ্রহকালে গুলিতে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন  হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের বড় ভাই নূর উদ্দিন মুদাচ্ছির।

নূর উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত শুক্রবার উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ববাজারে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় মুজাক্কির।

এ সময় আহত মুজাক্কির বাঁচার জন্য বারবার আকুতি জানালেও উপস্থিত স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সদস্যরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘসময় বাজারে পড়ে থাকার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মুজাক্কির মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক।

বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির পড়ালেখার পাশাপাশি সংবাদিকতা করত। কিন্তু সে কোনো দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, নিহত মুজাক্কির সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাঁড়াত।

সে রোগীদের প্রয়োজনে ‘এ’ নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত ২৬ জনকে দিয়েছে। করোনাকালীন নিজ এলাকার অসহায় ও গরিব মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। ঈদে দুস্থ ও এতিমদের গোপনে সহযোগিতা করত।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের মা মমতাজ বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার আদরের ছোট ছেলে মারা যাওয়ার পর আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে বুধবার একটি ভিডিও দেখেছিলাম। ভিডিওতে দেখা যায়, গত কয়েক মাস আগে একজন ব্যক্তি তাকে অকথ্যভাষায় গালাগাল করে মারধর করে। ওই হামলাকারী তাকে বলে ‘তোর কোন বাবা আছে?। আমি ওই হামলাকারীকে  গ্রেফতার করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। এ ঘটনায় আইনিব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন নিহতের ভগ্নিপতি আবদুস সাত্তার।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের বাবা মাওলানা নূরুল হুদা মো. নোয়াব আলী মাস্টার বলেন, ওই দিন ঘটনাস্থলে তিনি বা তার পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিল না। তাই কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা দেখিনি। তবে যারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি করেন। খুনিদের ফাঁসির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here