স্টাফ রিপোর্টার :: উদ্ভাবন ও উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১ জুলাই, (শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
আনন্দঘন পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র/ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করে।
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠার ৯৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম সাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচীর মধ্যে ছিল পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা, উদ্বোধনী সংগীত, শোভাযাত্রা, গবেষণা ও আবিস্কার বিষয়ক প্রদর্শনী।
সকাল সোয়া ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন এবং উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দিনব্যাপী কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল ১০টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মলে জমায়েত হন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আরেফিন সিদ্দিক র্যালির নেতৃত্ব দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ শিক্ষক, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
র্যালিটি টিএসসি মোড়, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি হয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সবাইকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একইসঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ এবং হলি আর্টিজান ও সারা বিশ্বে বিভিন্ন জঙ্গি হামলায় নিহতদের তিনি স্মরণ করেন।
উপাচার্য বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান শতাব্দীকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের শতাব্দী হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এ যুগে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নিরীহ মানুষ হত্যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা সময়ের চাহিদা পূরণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গঠন বর্তমান সময়ের একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হওয়ার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আজ সকলকে সত্যনিষ্ঠ জাতি গঠনের প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা যেভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন তা আমাদের জন্য গর্বের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে দুর্লভ পা-ুলিপি প্রদর্শনী এবং কার্জন হলে বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও গবেষণা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হল দিনব্যাপী নিজস্ব কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ উপলক্ষে হল, বিভাগ ও অফিসসমূহ আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা ছিল।