বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে::
মন্ত্রীসভা থেকে সদ্য পদত্যাগকারী বিতর্কিত সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী সাংসদ ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে দেয়নি কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ)। কানাডার স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১.৩১ মিনিটে টরেন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে তাকে মধ্যপ্রচ্যের একটি দেশের বিমানে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে কানাডার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে। কানাডায় বসবাসরত ডা. মুরাদের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
কানাডার টরেন্টো প্রবাসী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জানান, মন্ত্রীসভা থেকে সদ্য পদত্যাগকারী বিতর্কিত সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী সাংসদ ডা. মুরাদ হাসান আমিরাতের একটি ফ্লাইটে  শুক্রবার  দুপুর ১.৩১ মিনিটে টরন্টো পিয়ারসন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চা্ওয়া হয়। বিপুল সংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলেও তাকে জানানো হয়। পরে তাকে মধ্যপ্রচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপির এক শীর্ষ নেতার মেয়েকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই ডা. মুরাদ হাসানের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। এরপর সোমবারই (৬ ডিসেম্বর) মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ। ওইদিন বিকালেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের কারণে মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদিকে জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া তার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদীয় বৈঠকে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here