মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি :: কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে হতদরিদ্র খালেদা আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ১৩৮তম স্থান পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি হতে না পেরে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে তার শিক্ষাজীবন। এ জন্য খালেদার পরিবার সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য মানবিক আবেদন জানিয়েছেন।
জানাযায়, উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের হতদরিদ্র আলাল উদ্দিনের মেয়ে মোছাঃ খালেদা আক্তার এ বছর হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে মানবিক শাখায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ লাভ করে। ইত:পূর্বে ২০১২ সালে হারেঞ্জা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
মেধাবী খালেদা দারিদ্র জয় করে চলতি শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ-ইউনিটে মানবিক শাখায় ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় ১৩৮-তম স্থান অর্জন করে (ভর্তি পরীক্ষার রোল নং-৫০২২৮৮) কিন্তু অর্থাভাবে এখনো সে ভর্তি হতে পারেনি।
সরেজমিনে শনিবার (০৮ নভেম্বর) নিজ বাড়িতে খালেদার পিতা আলাল উদ্দিন আবেগ জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ভিটে-বাড়ি ছাড়া তার কোন সহায়-সম্পত্তি নেই। অন্যের জমি চাষ করে কোনো রকমে সংসার চলে।
তিন মেয়ে-দুই ছেলের মধ্যে খালেদা ২য়। বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা কামিল পাশ করে বাড়িতে দর্জির কাজ করছে। ৩য় মেয়ে পলি আক্তার স্থানীয় হারেঞ্জা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ছে। দুই ছেলে আজাদ রহমান ৭ম শ্রেণীতে ও সাজ্জাদ হোসেন ২য় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
এমতাবস্থায় মেয়ের উচ্চ শিক্ষার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও অর্থাভাবে তার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় তিনি দিশেহারা।
হতদরিদ্র খালেদা জানান,মেধা কোটায় ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হলেও পড়ালেখার খরচ চালানোর সামর্থ তার পিতা নেই।তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা না পেলে পড়ালেখা বন্ধ করে গার্মেন্টসে কাজের সন্ধান করতে হবে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এ ব্যপারে অধ্যক্ষ মোঃ মোসলেহ উদ্দিন খান জানান, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিয়মিত ক্লাস করতো খালেদা। খরচ যুগাতে কলেজ বন্ধের সময় টিউশনি করেও ভাল রেজাল্ট করে সে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
প্রবল ইচ্ছার কাছে দারিদ্র তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি সেটা গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগীতা পেলে সে বড় কিছু হতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।