আসাদুজ্জামান সাজু।
লালমনিরহাট: ভুল চিকিৎসার কারণে বকুল হোসেন নামে এক রোগীর মৃত্যুর ২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক গ্রেফতার না হওয়ায় নিহতের পরিবারের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশের দাবী, এ ঘটনায় রংপুর মেডিনোভা ক্লিনিকের ম্যানেজার তুলে চন্দ্র রায়কে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ক্লিনিকের মালিক আব্দু্ল্লাহ আল মামুন ও চিকিৎসক ডা: জাহিদ হোসেন পালতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।
নিহত বকুল হোসেন লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়াডের দুলাল হোসেনের ছেলে বলে জানা গেছে।
বকুল হোসেনের স্ত্রী সোমানা আক্তার রম্নমি সোমবার সকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ক্লিনিক ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হলেও মালিক ও চিকিৎসককে গত ২ দিনেও গ্রেফতার করা হয়নি।
নিহত বকুলের মা ববিতা বেগম কান্না কন্ঠে বলেন, আমার ছেলের মত আর কারো ছেলের যেনো ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু না ঘটে, সেই কারণেই আমার ছেলের মৃত্যুর সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করছি। ওনাদের গ্রেফতার করে বিচারের ব্যবস্থা করুন।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুযারি বকুল মোটর সাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরতর আহত হন। ওই দিনেই তাকে রংপুরের সোনার বাংলা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ২ দিন পর ৪ জানুয়ারি তাকে রংপুর মেডিনোভা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ৭ জানুযারি বকুলের দুই পায়ে অস্ত্রোপচার করেন ডা. জাহিদ হোসেন। ৯ জানুযারি পর্যন্ত তার জ্ঞান না ফিরলে রংপুর মেডিকেলে ভতির জন্য পাঠিয়ে দেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সেখানে জ্ঞান না ফেরা অবস্থায় গত শনিবার বিকালে মারা যান বকুল।
এ দিকে ভুল চিকিৎসায় বকুলের মৃত্যুর অভিযোগে এনে তার ছোট ভাই তারেক হোসেন বাদী হয়ে শনিবার কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেডিনোভা ক্লিনিকের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেন। কিন্তু ওই ক্লিনিকের মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও চিকিৎসক ডা: জাহিদ হোসেন পালতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেডিনোভা ক্লিনিকটির মালিক আনিছুর রহমান স্বাস্থ্য বিভাগের এক চতুর্থ শ্রেীণর কর্মচারী। যিনি বর্তমানে বরিশালে কমরত আছেন। অনুমোদন ছাড়াই ধীর্ঘদিন ধরে ক্লিনিকটি পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। তবে সরকারি চাকুরীজীবি হওয়ায় কাগজে-কলমে আনিছুর মালিক না হলেও সেটি দেখভাল করছিলেন তারই ভগ্নিপতি আব্দুলস্নাহ আল মামুন।
রংপুর পুলিশ সপুার মিজানুর রহমান জানান, মেডিনোভা ক্লিনিকের ম্যানেজারকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। মালিক ও চিকিৎসকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুত তারা গ্রেফতার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
