কোম্পানীগঞ্জ : তৃণমূল নেতাদের আস্থা অর্জন করতে না পারায় উপজেলা বিএনপির নেতারা এখন ভর করেছে পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপর।

নেতৃত্বের অযোগ্যতা, তৃণমূল নেতাদের সাথে সম্পর্কের অবনতি, ভোট রাজনীতিতে দূর্নীতি, কর্মীদের সাথে প্রহসন, রাজনীতির মাঠে সততার অভাবসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এখন পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাঁধে ভর করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতেও সফল হচ্ছে না তারা।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখো মুখি হতে হচ্ছে উপজেলা নেতাদেরকে। উপজেলা নেতাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝুঁকে পড়েছে পৌর বিএনপির নেতাদের প্রতি। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে দেখা গেছে নেতৃত্বের অগ্রভাবে পৌর বিএনপির নেতাদের সরব উপস্থিতি।

অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। জানা যায়, ১৮ জুলাই উপজেলা বিএনপি ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে চাইলে নেতৃমূল নেতাদের অসহযোগীতার কারনে তা সম্ভব না হওয়ায় পরে তারা পৌর বিএনপির সহযোগীতা নেয়। যদিও প্রথম অবস্থায় পৌর বিএনপি আলাদাভাবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করার ইচ্ছা পোষণ করেছিল। কিন্তু উপজেলা বিএনপির নেতাদের অনুরোধে দলীয় ভাবমূর্তি রড়্গা করতে পৌর বিএনপি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে উপজেলা বিএনপির সাথে একসাথে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেখানে বিপত্তি দেখা দেয়। উপজেলা বিএনপির ব্যানারে আয়োজন করায় ইউনিয়ন সভাপতি-সম্পাদকেরা এবং কৃষকদল সে ইফতার পার্টি বর্জন করে। এ নিয়ে ইফতার অনুষ্ঠানে বাদানুবাদ, হাতাহাতি ও নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান বর্জন করে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে চরফকিরা, চরএলাহী, রামপুরম মুছাপুর, চরহাজারী ও চরপর্বতী ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি আমাদের আস্থা না থাকায় আমরা অনুষ্ঠান বর্জন করেছি। তারা জানায়, এ নেতৃত্ব অযোগ্য, দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় এদের কোন ভূমিকা নাই। আমরা নতুন নেতৃত্ব চাই। যে দলকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং কর্মীরা যাদেরকে সাদরে গ্রহন করে নিবে এমন নেতৃত্বই আমারা আশা করি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ইউনিয়ন নেতা জানায়, এজন্য আমরা একটি পদক্ষেপ নিলেও উপজেলা নেতৃবৃন্দের কুটচালের কারনে তা সম্ভব হয়নি। তাদের অন্যায় কাজ, ও দূর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে এমন আশংকায় তারা দলকে চাঙ্গা করতে পারবে এমন লোকদেরকে দলে ভিড়তে দিচ্ছেনা।

কারন তারা দলের চাইতে নিজের পকেটের কথা চিনত্মা করে বেশী। তারা অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচন এলে তারা দলের প্রার্থীকে ভোটে জেতানোর চাইতে ভোট বিক্রি করে নিজের পকেট ভারী করার দিকে মনোযোগ দেয় বেশী। যার কারনে কোম্পানীগঞ্জে জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও আমরা উপজেলা নির্বাচন এলে পরাজিত হই। তারা এও বলেন যে, যদি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ভোটে যেত, তাহলে ব্যরিষ্টার মওদুদ আহমেদ পরাজিত হতেন। কারন উপজেলা নেতারা তাদের পকেটের স্বাস্থ্য ভাল করতে আ’লীগের কাছে তাদের ভোট বিক্রি করে দিত।

কয়েকজন সুনিদ্দিষ্টভাবে বলেন, তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে চারদলীয় জোট প্রার্থী ফখরম্নল ইসলাম ফারুক প্রার্থী হলেও বিএনপির উপজেলা নেতারা আ’লীগের কাছে বিক্রি হওয়ায় তিনি পরাজিত হন। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনেও একই প্রক্রিয়ায় তারা আ’লীগ প্রার্থীর কাছে ভোট বিক্রি করে দিয়ে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে দেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here