মোঃআশরাফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ::

আম রাজধানী হিসেবেই পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। দেশের সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় এ জেলায়। তবে এবার শুধু আম নয় মাল্টা চাষেও তাক লাগিয়েছেন রুবেল আলী (২৯)। ২৬ বিঘা জমিতে বারি-১ জাতের ৪ হাজার মাল্টা গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এতে এ বছর প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।

জানা যায় রুবেল আলী গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের ব্যালক্যাপাড়ায় ২৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন মাল্টা বাগান। এখন তার বাগানে সারি সারি মাল্টা গাছ। গাছগুলোয় থোকায় থোকায় ঝুলছে গাঢ় সবুজ ও হলুদ রঙের মাল্টা। এই মাল্টা খেতে অতুলনীয়। পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। মাল্টার বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন স্থানীয়রা।

বাগান সংশ্লিষ্টরা জানান এবার সব গাছে পরিপূর্ণভাবে ফলন ধরেছে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা ধরেছে। গাছগুলো মাটিতে নুইয়ে পড়েছে মাল্টার ভরে। এতে উৎসাহ পেয়ে নিয়মিত পরিচর্যা করছেন তারা।
বাগানের মালিক রুবেল আলী বলেন একদিন মুঠোফোনে ইউটিউব দেখতে দেখতে মাল্টা বাগানের ভিডিও আসে। দেখে ভালো লাগে। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিই মাল্টা বাগান করবো।

প্রথমে ৩ হাজার গাছ রোপণ করলাম। পরে দেখি ভালো ফলন হচ্ছে। তাই আরও ১ হাজার গাছ কিনে আনি। এখন ২৬ বিঘা জমিতে প্রায় ৪ হাজার মাল্টা গাছ আছে। আশা করছি মাল্টা বিক্রি করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা পাবো।

তিনি বলেন ২০২০ সালে শুরু করেছি। এই বারি-১ জাতের মাল্টা বাগানে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। তবে গত বছর মাল্টা বিক্রি করেই খরচ উঠে গেছে। এবার বাগানের পরিচর্যায় খরচ করেছি ১২-১৫ লাখ টাকা। এখন ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আমার বাগানের মাল্টা। মাল্টা বাগানে প্রায় ২০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তার মধ্যে একজন হলেন তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন রুবেল ভাইয়ের বাগানে আমি প্রতিদিন কাজ করি। এতে আমাকে দিনে ৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়। আর এ দিয়েই চলে আমার সংসার।

শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে মাল্টা বাগান দেখতে এসেছেন উদ্যোক্তা ইসমাইল খান শামীম। তিনি বলেন রুবেল ভাইয়ের মাল্টা বাগান দেখে মুগ্ধ হলাম। সত্যি যেমন দেখতে অসাধারণ। ফলটি খেতেও খুব সুস্বাদু। আমি মনে করতাম অন্য দেশের মতো হয়তো আমাদের দেশের মাল্টা মিষ্টি হয় না। কিন্তু এখানে এসে মাল্টা খেয়ে ধারণা পরিবর্তন হয়েছে।

নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালেহ আকরাম বলেন আমরা কেবলই রুবেল আলীর মাল্টা বাগান পরিদর্শন করেছি। তিনি খুব সুন্দর করে মাল্টা বাগান তৈরি করেছেন। এছাড়া রুবেলের বাগানের মাল্টাও অনেক
মিষ্টি। আমরা পরামর্শ দিয়ে রুবেলের পাশে আছি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here