একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ধীরগতিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিচার কাজ আরও দ্রুত করার দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম। প্রয়োজনে আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে ফোরামের নেতারা বলেছেন, বিশেষ একটি শ্রেণী ‘৭১-এর চিহ্নিত ঘাতকদের রক্ষার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এ অবস্থায় বিচার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা না হলে চক্রান্তকারীরা ঘাতকদের রক্ষায় আরও মরিয়া হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে তারা গোলাম আযমকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছেন। এদিকে ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটির প্রধান অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতারা এসব দাবি জানান। ফোরামের আহ্বায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে বৈঠকে মেজর জেনারেল (অব.) কেএম শফিউল্লাহ, ফোরামের সদস্য সচিব লে. জেনারেল (অব.) হারুন উর রশীদ ও ম. হামিদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বর্তমান সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। তারা বিচার কার্যক্রম আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেছেন সংগঠনের নেতারা।
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যারা আটক আছে সরকার তাদের বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। আশা করছি প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তাদের বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।
গোলাম আযমের গ্রেফতার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। যথাসময়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশেষ একটি জোট যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের নিরপরাধ বলেও সার্টিফিকেট দিচ্ছে। এ অবস্থায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আগামী ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফোরামের নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। মূলত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজে বিরোধী দলের প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য তারা এ সমাবেশ করছেন। সমাবেশ সফল করার বিষয়ে ফোরাম নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ফোরামের আহ্বায়ক এ কে খন্দকার বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বিচার কাজ সম্পন্ন করতে সরকার দেরি করছে বলে মনে করি। আমরা চাই বিচার কার্যক্রম আরও জোরদার হোক। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফোরাম এ বিচারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা, এই বিচার দ্রুত শেষ করে সরকার জাতির কলঙ্ক দূর করবে।
মেজর জেনারেল (অব.) শফিউল্লাহ বলেন, ‘৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পটুয়াখালীতে বহু মা-বোনকে ইজ্জত হারাতে হয়। তাদের মধ্যে ৩৫-৩৬ জন এখনও জীবিত আছেন। তারা বিচারে সাক্ষী দিতে চাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here