গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন, হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ::
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দিনাজপুরের হিলিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। আমদানি শুরু হলে দাম আরো কমবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকামগুলোতে সকালে বাড়ছে তা আবার বিকেলে কমছে পেঁয়াজের দাম। এভাবে পেঁয়াজের দাম ওঠা নামা করলে আমাদের লোকসান কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা।
আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে বাংলহিলি পাইকারী ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, দুই দিন আগেও যে দেশীয় মুড়িকাটা পেঁয়াজ ১০০ টাকা থেকে ১০৫ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন,দুই দিন আগে আমি পেঁয়াজ কিনেছি ১০০ টাকা কেজি দরে। আজকে আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম ৪৫ টাকা দিয়ে।শুনতেছি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে। এই খবরে না কি পেঁয়াজের দাম কমছে। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকে। কিন্ত আমাদের মজুরি বাড়ে না। কি আর করার পরিবার আছে তাই দাম বেশি হলেও কিনতেই হবে।
যেখানে এক কেজি কিনতাম সেখানে আধা কেজি কিনছি। এভাবেই কোন রকম চলে যাচ্ছে আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের জীবন।
হিলি বাজরের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মোবারক হোসেন জানান,দুই দিন আগে পাইকারী বাজার থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৯৪-৯৫ টাকা দরে কিনে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ মঙ্গলবার সকালে পাইকারী বাজার থেকে ৮৭ থেকে ৮৮ টাকা দরে কিনে খুচরা ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন,আমরা চার দিন আগে মোকামে সকালে এক দামে কিনলে বিকেলে মোকামে আরেক দাম ওঠে। এভাবে দাম ওঠা নামা করলে আমরা পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা পড়ে যাই বিপাকে। মোকামেই এভাবে পেঁয়াজের দাম ওঠা নামা করায় কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা আমাদের লোকসান গুনতে হয়। আমরা স্থানীয় পাইকারী বাজারে চার দিন আগে যে পেঁয়াজ কিনেছি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। সেই পেঁয়াজ আমরা খুচরা পর্যায়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। চার দিন আগে কিনা পেঁয়াজেই এখনো বিক্রি করে শেষ করতে পারিনি। গত রোববার থেকে মোকামে দাম কমায় আমাদের আগের কিনা পেঁয়াজ ৫ থেকে ১০ টাকা লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে।
হিলি বাজারের পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু তাহের বলেন,বর্তমানে মোকামে প্রকারভেদে ২৮ থেকে ৩৬ শত টাকা মন বিক্রি হচ্ছে।মোকামেই ২৮ থেকে ৩৬ শত টাকা মন কিনে আবার পরিবহন ভাড়া আছে। সব খরচ মিলে মোকামেই কিনতে পড়ছে কেজি প্রতি ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা মোকামে কম দামে কিনতে পারলে এক থেকে দুই টাকা লাভ রেখে বিক্রি করে থাকি। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দেশি পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ভারত সরকার অভ্যন্তরীন পেঁয়াজের সংকট অজুহাত দেখিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এরপর পর থেকে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজের দাম কয়েক দফায় বেড়ে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।