ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ও দৌলতপুর ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বরাদ্দ ২৬’শ ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) প্রকল্পের কার্ড দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা আজও সম্ভব হয়নি।
আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা নিয়ে দ্বন্দের কারণে উপজেলা থেকে ভিজিএফ’র তালিকা অনুমোদন করা যায়নি বলে হরিনাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
হরিনাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত ঈদু আযহার আগে ভিজিএফের চাল বন্টন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়। সেই মোতাবেক চেয়ারম্যানগণ তালিকা প্রস্তত করে উপজেলায় জমা দেন।
ইউএনও আরো জানান, ইউপি চেয়ারম্যানদের দেওয়া তালিকা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান আপত্তি তোলেন। তাছাড়া এখানকার উপদেষ্টা হলেন এমপি মহোদ্বয়। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে চাল বিলি করতে। দুই চেয়ারম্যান রাজি না হওয়ায় চাল বিলি করা হয়নি।
চাল বিতরণ না হবার কারণ ব্যাখ্যা করে ইউএনও আব্দুর রাজ্জাক জানান চেয়ারম্যানদের করা এই তালিকা থেকে ১৫% উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৩৫% হরিনাকুণ্ডু আওয়ামীলীগ নেতাদের দিতে হবে।
ইউএনও জানান অন্য ইউপি চেয়ারম্যানারা ভাগ বন্টনের এই হিসেব মেনে নিলেও বাধসাধে হরিনাকুণ্ডুর দৌলতপুর ও তাহেরহুদা দুই ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও মোজাম্মেল হক।
হরিনাকুণ্ডুর তাহেরহুদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ করেন আমাদের বরাদ্দ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঞ্চাশ শতাংশ কার্ড দাবী করে। তাতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাদের ভিজিএফ কর্মসুচির চাল দেয়নি। এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যোন আবুল হোসেন দাবী করেন তার এলাকায় আংশিক চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাকী চাল সরকারীদলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ থাকায় হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান টানু মল্লিক জানান, আমরা রাজনীতি করি। আমাদেরও তো হতদরিদ্র কিছু সমর্থক আছে। তারাও তো ভিজিএফ কার্ডের চাল প্রাপ্ত। কিন্ত বিএনপি সমর্থিত দুই ইউপি চেয়ারম্যান তাতে রাজি না হওয়ায় এই সমস্যা তৈরী হয়েছে।
এদিকে ঈদ পেরিয়ে গেলেও গরীব ও দুসস্থদের ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণ না করায় দুই ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে যারা এই ভাগ বন্টনে রাজি হয়ে ঈদুল আহযার আগে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করেছে তাদের মাঝে ১০ কেজির পরিবর্তে ৭ কেজি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহারিয়ার রহমান রকি/ঝিনাইদহ