নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজের ভেতর থেকে রোববার রাতে অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের (১৮) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিষ্ঠান বেষ্টনীর ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করা হলেও নিহত যুবক সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করছে মেঘনা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। এতে করে পুরো ঘটনা রহস্যজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রোববার সকাল থেকে যুবকের লাশ পড়ে থাকলেও মেঘনা গ্রম্নপ কর্তৃপক্ষ দিন গড়িয়ে রাতে পুলিশকে খবর দেয়। তাছাড়া যুবকের মৃত্যুর ব্যাপারে কোন কথা না বলতেও শ্রমিকদের শাসিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে ‘মালিক পক্ষের নিষেধ’ এর অজুহাত দেখিয়ে বাধা দেয় নিরাপত্তা প্রহরীরা।
ঘটনাস্থলে যাওয়া সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ এনামুল জানান, মেঘনা শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ ১ নং ইউনিটের ভিতর ফ্রেশ ফিডস্ ভবনের পাশ থেকে রোববার রাত সাড়ে ৭টায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এস আই এনামুল বলেন, নিহত যুবকের শরীরে বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে শনিবার রাতে কোন এক সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকটির মৃত্যু ঘটে।
নিহত যুবকটি মেঘনা গ্রুপের কোন শ্রমিক নয় বলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা। তবে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের এ ধরনের বক্তব্য রহস্যজনক।
তিনি জানান, কঠোর নিরাপত্তা উপেক্ষা করে বহিরাগত যুবকের ভেতরে প্রবেশ ও তার মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেঘনা গ্রুপের ১নং ইউনিটের এক শ্রমিক জানায়, নিহত যুবকটি প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক শ্রমিক হিসাবে কাজ করত। বেশ কয়েকবার প্রতিষ্ঠানে তাকে কাজও করতে দেখা গেছে।
ওই শ্রমিক আরো জানান, রোববার সকালে লাশটি পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা সকল শ্রমিকদের ডেকে লাশের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে নিষেধ করেন। দিনভর যুবকের লাশ পড়ে থাকার পর রাতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়।
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইউনুস আলী জানান, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। থানায় এখন অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে তখন প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি আরো জানান, নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
মাকসুদুর রহমান কামাল/নারায়ণগঞ্জ