নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার তিন দিন পরও আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেছেন, সরকার আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার পথ করে দিচ্ছে।

রোববার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

নরসিংদীতে তাদের সন্ত্রাসীদের হাতে নিজেদের দলের পৌর মেয়র খুন হয়েছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘নিহতের পরিবার মামলা করার পরও আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। সরকার এভাবে আসামীদের পালিয়ে যাওয়ার পথ করে দিচ্ছে।’

‘গুম, হত্যা ও খুনের মেশিনে পরিণত হয়েছে শাসকদল।’- যোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো লোকমানের বাড়ি পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। তাদের এ অবস্থা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?’

তিনি খায়রুল কবীর খোকনের মুক্তি দাবি করে বলেন, লোকমানের পরিবার যাদের নামে মামলা করেছে তাদের না ধরে বিরোধী দলকে হয়রানির জন্য খোকনকে গ্রেপ্তার করেছে।

লোকমানের হত্যাকারীদের বাঁচাতেই খোকনকে গ্রেপ্তার করে তার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে নরসিংদী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র লোকমান হোসেন।

ওই রাতেই পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও নরসিংদী জেলা বিএনপি সভাপতি খায়রুল কবীর খোকনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে, লোকমান হত্যার ঘটনার পরের দিন ছাত্রলীগ নরসিংদী শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ভাংচুর চালায়। বুধবার একটি ট্রেনও পুড়িয়ে দেয় তারা।

অপর দিকে, হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাতে লোকমানের ছোট ভাই মো. কামরুজ্জামান একটি মামলা করেন।

মামলায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়, যাদের একজন বাদে সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী।

এদিকে, লোকমান হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার জেলার পুলিশ সুপার আক্কাস উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রত্যাহার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসবি) এনামুল কবীর ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাককে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের লোকমান হত্যা এবং ভাংচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনার ‘মূল সাক্ষী’ উল্লেখ করে তাদের প্রত্যাহার ও বদলি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাংসদ নাজিম উদ্দিন, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here