চলতি আখ মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে ৫টি চিনিকলে ৩০ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনিকলগুলোর আশপাশে প্রায় ১ হাজার ক্রাসার মেশিন প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৫শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হওয়ায় লক্ষমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা নেই। ফলে এবারো এই ৫টি চিনিকলের মাথায় চেপে বসবে আরো ৫০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা। ক্রমাগত লোকসানের ফলে করপোরেশনের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৭ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সুগার মিল ও চিনিখাদ্য করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চলত মৌসুমে রংপুর বিভাগের ৫ট চিনিকলে ৩০ হাজার ৭০১ মেট্রিক টন চিনি ঋৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পঞ্চগড় চিনিকলে সাড়ে ৭ হাজার টন, ঠাকুরগাও চিনিকলে ৯ হাজার ৬৩ টন, সেতাবগঞ্জ চিরিনকলে ৫ হাজার ২৫০ টন, শ্যামপুর চিনিকলে ৩ হাজার ৯৮৮ টন, রংপুর (গাইবান্ধা জেলার মহিমাগঞ্জস্থ) চিনিকলে ৪ হাজার ৯শ টন। এ মৌসুমে চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্য আখের দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার মিলগেটে প্রতি কুইন্টাল আখের দাম ধরা হয়েছে আড়াইশ টাকা। প্রতিমণ ৯৩ টাকা ৩০ পয়সা। গতবারের চেয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে ১০ টাকা ২০ পয়সা। মিল এলাকায় খোঁজখবর  নিয়ে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে মিলজোনগুলোতে ১ হাজারের বেশি ক্রাসার মেশিনে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোন আইন না থাকায় গুড় উৎপাদনকারীদের বির“দ্থে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছে না প্রশাসন। জানা গেছে, রংপুর সুগার মিল এলাকায় ২ শ, শ্যামপুর সুগার মিল জোনে ৩শ, ঠাকুরগাঁও মিলজোনে ১৫০, সেতাবগঞ্জ মিলজোনে শাতাধিক, ক্রাসার মেশিনে প্রতিদিন অবৈধভাবে গুড় উৎপাদন হচ্ছে প্রকাশ্যে। গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে পর্যায়ক্রমে  চিনিকলগুলো আখ মাড়াই শুর“ করে। কোন মিলই চাহিদামাফিক উৎপাদনে যেতে পারেনি। এবারো লক্ষযমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখের আবাদ কমে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে আখে রসের পরিমাণ কমে যাওয়ায় চিনি উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। দিন যতই যাচ্ছে মিলগুলোর যন্ত্রাংশ ততই নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে মিলগুলো বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য। অভিজ্ঞমহলের ধারনা বিভিন্ন সেক্টরে সীমাহীন অনিয়ম দুনীতি অব্যবস্থাপনা ও চাহিদামতো আখ না পাওয়ার কারণে প্রতিবছরই মিলগুলো লোকসান গুনছে। মহিমাগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপক পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, এখানে সরকারি ভর্তুকি না দিলে এক পর্যায়ে চিনিকলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে আখচাষের ওপর নির্ভরশীল প্রায় দেড় কোটি মানুষের র“টি-র“জি হুমকির মুখে পড়বে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here