ইয়ানূর রহমান, যশোর প্রতিনিধি ::

অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে যশোরে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে যশোরের ৫ উপজেলায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে সশস্ত্র বাহিনী। ইতিমধ্যে জেলার ৫ উপজেলাতেই সেনাবাহিনী তাদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে। এই বাহিনী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের সাথে পরামর্শ করে ভোটের আগে পরে দায়িত্ব পালন করবে।

যশোর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সুত্র জানা যায়, এছাড়া সেনাবাহিনী যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করবে। সেই সাথে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আটকও করতে পারবে। ৮২৫ কেন্দ্রের যেখানেই বিশৃঙ্খলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় মোকাবেলা করবে।

তথ্য মিলেছে, বাংলাদেশে আগের সব জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও নির্বাচনের সময় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সেনাবাহিনী নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। সিদ্ধান্ত
অনুযায়ী গত ৩ জানুয়ারি থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনী আসনগুলোতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি থাকবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। নির্বাচনকে ঘিরে যশোরের পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি বাহিনীগুলোর সাথে দায়িত্ব পালন করতে ৩ জানুযারি থেকে যশোরের মাঠেও দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর সদস্যদের।

পুলিশ প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, যশোর সদর উপজেলার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পটি করা হয়েছে হামিদপুর আল হেরা কলেজে, মণিরামপুরের ক্যাম্পটি স্থাপন করা হয়েছে মণিরামপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজে, কেশবপুরের সেনা ক্যাম্প করা হয়েছে কেশবপুর পৌর শহরের বায়সা মোড়ের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (টটিসি ),
বাঘারপাড়া ক্যাম্পটি করা হয়েছে বাঘারপাড়া ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ে।

তবে সীমান্তবর্তী উপেজলা হওয়ায় শার্শা ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। সেখানে বিজিবি দায়িত্ব পারন করবে বলেও তথ্য মিলেছে। ওই সব ক্যাম্পগুলো থেকে আগামি ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত উপজেলার কেন্দ্র এলাকাগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষে আইন শৃংখলা সমুন্নত রাখতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়ত করবে। যশোর রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের সাথে পরামর্শ করে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী।

সূত্রের দাবি, নির্বাচনী আসনের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র এলাকা ও নোডাল পয়েন্টে অবস্থান করবে। যেকোনো সংকট ও অসঙ্গতির ক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে যাবে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করবে।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ও নোডাল পয়েন্ট নির্ধারণ করবেন আসন সংশ্লিষ্ট যশোরের স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় শুরু করেছে। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী সেখানে যাবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশমত পরিস্থিতি মোকাবেলা ও পরিবেশ স্বাভাবিক করবে।

এ ব্যাপারে যশোর জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার জানিয়েছেন, ৩ জানুয়ারি থেকেই যশোরে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। যশোর সদর, বাঘারপাড়া, অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলায় ক্যাম্পও করেছে। তবে সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় চৌগাছা, শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে।

এদিকে, যশোর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআই ওয়ান মামুন খান জানিয়েছেন, যশোর জেলা পুলিশসহ স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। যশোর সদরসহ ৫টি উপজেলায় অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে। পুলিশের দুই হাজারের বেশি ফোর্স নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here