ইয়ানূর রহমান, যশোর প্রতিনিধি ::

যশোরের গদখালীর কালীমন্দিরে তিন দিনব্যাপী পৌষ মেলার প্রথম দিনে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। ভক্তদের আগমনে মন্দির প্রাঙ্গণে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূণ্যার্থীদের মধ্যে মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া মেলা শনিবার পর্যন্ত চলবে।

আজ ১১ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে মেলায় কথা হয় যশোর শহর থেকে আগত রিতিকা রানী (৫৭) সাথে। তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও মেলায় এসেছি। অশুভ বিনাশের জন্য মায়ের মন্দিরে আর্শিবাদ করেছি। শার্শার জামতলা থেকে আসা বৃদ্ধা গীতারানী বলেন, ৫০ বছর ধরে এ মেলায় আসছি। শান্তি ও সুখের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি।

মেলায় খুলনা থেকে আগত প্রসাধনী বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, মেলায় প্রচুর লোক, তবে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনা তুলনামুলক ভালো হচ্ছে না। সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে আসা মিষ্টি দোকানী রনজিত কুমার বলেন, লোকজন বেশি হওয়ায় বিক্রিও অনেক বেশি হচ্ছে। বেচা-বিক্রিতে আমরা বেজায়  খুশি।

কেশবপুর থেকে আসা খেলনা বিক্রেতা কিষ্ট বিশ্বাস বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় মেলায় এসে প্রসাধনী নিয়ে বসার জায়গা পাইনি। একদিন আগেই সব জায়গা দখল হয়ে গেছে।

স্থানীয় প্রবীণেরা জানান, ১৪৬২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েকশ বছর ধরে মন্দিরটিকে ঘিরে পালিত হয়ে আসছে পৌষমেলা। দেশের ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তের
মিলনমেলায় পরিণত হয় এ মেলা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই ধর্মের দুজনের প্রেম প্রণয়ের সূত্রধরে রডারিক উপাসনার জন্য খ্রিষ্টানদের গড ও হিন্দুদের দেবী কালীকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিষ্ঠা করেন কালী মন্দিরটি। যা পরবর্তী কাল থেকে গদখালী কালী মন্দির বলে পরিচিত পায়।

মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র ভক্ত বাবুল বলেন, প্রতি বছর পৌষ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিন দিনের এ মেলা বসে। মেলাকে ঘিরে এলাকার সব সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here