রাকিবুল হাসান, মনপুরা ভোলা প্রতিনিধি ::

ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পরও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কোমলমতি শিশুরা ভোলা জেলার বিছিন্ন দ্বীপ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যবহার করছে কলা গাছের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনার। কলা গাছের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেন করে শিশুরা বড়দের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে দেশাত্ববোধের মহত্ত্ব। মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলা গাছের শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর পরিচালিত মজার স্কুল:মনপুরার দুই শাখার শিক্ষার্থীরা। ভাষা দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হয় এমন ভাবনাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কলাগাছ দিয়ে নির্মাণ করা শহীদ মিনারে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা গভীর শ্রদ্ধা জানান।

২০১৯ সাল থেকে এই উপজেলায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে মজার ইশকুল। বিদ্যালয়টিতে স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার না থাকায় কলা গাছের অস্থায়ী শহীদ মিনারে তারা ফুল দিয়ে প্রতি বছর শ্রদ্ধা নিবেদন
করে থাকে।

বুধবার সকালে উপজেলার দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম কলনিতে পরিচালিত মজার ইশকুলে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে কলাগাছ পুতে শহীদ মিনার বানিয়ে তার উপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে শিশুরা।

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র ছিলো বিভিন্ন । এই উপজেলা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মান করা হয়নি অস্থায়ী কোন শহিদ মিনার । চিত্রাংকন ,রচনা প্রতিযোগীতার ও
আলোচনার মাধ্যমে শেষ করে অমর একুশের শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কার্যক্রম ।

ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে স্যার, ম্যাডামদের কাছ থেকে শুনে এবং বই পড়ে ২১ ফ্রেব্রুয়ারি মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস এর সম্পর্কে জানেন মজার ইশকুলের ছাত্রছাত্রীরা ।

২১ ফ্রেব্রুয়ারি মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালন করতে হবে জানতে পেরে বাড়ীতে গেন্দা ও গাদা ফুলের গাছ রোপন করেন । সেই গাছ এর ফুল দিয়ে কলা গাছের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে বলে জানায় মজার ইশকুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া আক্তার ও জান্নাত বেগম।

ভাষা শহীদদের সম্মানে আমাদের বিদ্যালয়ের কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়েছে, আমরা সেখানে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। এমনটাই জানালো বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ হাসন।

মজার ইশকুলের প্রোগ্রাম অফিসার অরবিন্দু রায় বলেন, আমাদের স্কুলটি বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনার তৈরির জায়গা এবং অর্থ নেই। সরকারি অনুদান পেলে শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব।অর্থাভাবে বিদ্যালয়ের সংস্করণ করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করেছে। সেখানে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা করে তারা।২০১৯ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রছাত্রীরা এইভাবে মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে ।

এর আগে মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি প্রভাত ফেরি করা হয়। প্রভাত ফেরিটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় স্কুল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। এ সময় ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে শিক্ষার্থীদের সামনে ভাষার তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here