ডেস্ক রিপোর্ট::  নিজের সাজা অন্যজনকে দিয়ে খাটানোর ঘটনায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

রোববার (১২ মে) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বদলি সাজা খাটানোর ঘটনা নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে আদালতের নজরে আনয়নকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, যেহেতু আসামি নিজেই বলেছেন তিনি পলাতক, সুতরাং পলাতক অবস্থাতে তো তার বাইরে থাকার সুযোগ নেই। দ্রুত তাকে কাস্টডিতে নেওয়ার জন্য আদেশ দেওয়া দরকার। আদালত শুনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। আর মামলার শুনানির জন্য মঙ্গলবার (১৩ মে) দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল এক আসামির পরিবর্তে আরেকজনের সাজা খাটার ঘটনায় নিম্ন আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও কারা কর্মকর্তারা ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সাত দিনের মধ্যে তাদেরকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের এ আদেশ অনুযায়ী আজ সবাই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আদালতে আসামি নাজমুল হাসানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সাঈদ আহমেদ রাজা। দুই জেলারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আজিম। আর দুই আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন এস এম শাহজাহান।

শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, নাজমুল যে হলফনামা দাখিল করেছেন, সেখানে তিনি নিজেই বলেছেন, এ রায়ের ব্যাপারে তিনি জানেন না। এমনকি রায়ের পরে তিনি হাজিরও হননি। তাহলে তিনি নিজেই বলছেন তিনি পলাতক। পলাতক অবস্থায় তার বাইরে থাকার সুযোগ নেই।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে উত্তরার একটি বাসায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ আনোয়ার হোসেন নামে একজনকে আটক করে। সে সময় পালিয়ে যায় মামলার মূল আসামি ঢাকার উত্তরার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান। এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মামলা করে। বিচারে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় পলাতক নাজমুল হাসানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত।

এ রায়ের পর নাজমুলের পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেল খাটেন মিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। পরে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ১১ দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে যান তিনি। পরে এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে ঘটনা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতির নজরে আনেন নিম্ন আদালতের এক আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি তখন এ মামলার আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এই বেঞ্চ শুনানি নিয়ে বিচারক, আইনজীবী, দুই জেলার এবং আসামি নাজমুল হাসানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশ দেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here