অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ::

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঘনকুয়াশার সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীত অব্যাহত রয়েছেল। রাতে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমে গেছে দিনের তাপমাত্রা। সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।

গতকাল শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৬ টায় দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ও বাতাসের গতি ০১ নটস এবং সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ও বাতাসের গতি ০২ নটস রেকর্ড করেছে দিনাজপুর আবহাওয়া অধিপ্তর। যা জেলায় এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় দিনাজপুর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ওবাতাসের গতি ০১ নটস এবং সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ও বাতাসের গতি ০৩ নটস রেকর্ড করেছে দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তর।

তবে গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়দিন থেকে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা কমেই আসছে।

এদিকে গতকাল শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি ফুলবাড়ীসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে। ঘনকুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসের কারণে কনকনে শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের। আয় রোজগার কমে গেছে ইজিবাইক আর অটোরিকশা চালকদের। ঘনকুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসের কারণে কনকনে শীতে কাজ করতে পারছেন না দিনমজুর ও ক্ষেতমজুররা। কাজ করতে গিয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায় মাঠেঘাটে টিকতে পারছেন না এসব ক্ষেতমজুররা।

উপজেলা আলাদিপুর সূর্যপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী ক্ষেতমজুর ফুলমনি হেম্ব্রম (৩৫) ও পুষ্প মার্ডী (২৯) বলেন, যখন থেকে কুয়াশার সঙ্গে বাতাস আর শীত নামছে তখন থেকে কাজকাম কমে গেছে। এতে করে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে পাড়েছেন তারা। হিমশীতল বাতাস আর কনকনে শীতের জন্য ক্ষেতে টিকে থাকা যাচ্ছে না। এজন্য এ কয়দিন কাজকাম করা যাচ্ছে না।

উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের কুদবীর মিশনপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর ক্ষেতমজুন রোজিনা টুডু (৩০) বলেন, পরিবারের অভাবের তাগিদে শীতের মধ্যেও ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে ঠান্ডায় এক ঘন্টাও সেখানে টিকে থাকা যাচ্ছে না। ঠান্ডায় হাত-পাসহ শরীর অবশ হয়ে আসছে। এজন্য কাজ করা যাচ্ছে না বলে রোজগারও হচ্ছে না।

ফুলবাড়ী পৌরশহরের অটোরিকশা চালক আব্দুস সাত্তার বলেন, কনকনে ঠান্ডার জন্য মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া বাড়ীর বাইরে বের হচ্ছেন না। এ কারণে অটোরিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রীর অভাবে তেমন আয় রোজগার করা যাচ্ছে না।

দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গতকাল শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৬ টায় দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ও বাতাসের গতি ০১ নটস এবং সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ ও বাতাসের গতি ০২ নটস রেকর্ড করেছে দিনাজপুর আবহাওয়া অধিপ্তর। বর্তমানে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা আরও দু-তিনদিন অব্যাহত থাকবে। যার ফলে সূর্যের দেখা যাওয়া কষ্টকর হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে চার হাজার ১৬০ টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আপাতত উপজেলা প্রশাসনের হাতে কোনে কম্বল মজুদ নেই, চাহিদা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেগুলো দুস্থ শীতার্তেদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here