মোঃআশরাফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ::

একুশে পদকজয়ী জিয়াউল হক বলেছেন, আমি টাকার অভাবে স্কুলে জেতে পারিনি। অভাবের তাড়নায় বেছে নিয়েছিলাম দই বিক্রির পেশা। আর এ পেশার আয় দিয়ে গ্রামে সাধারণ পাঠাগার তৈরি করেছি, ১২ হাজার শিশুকে শিক্ষা দিয়েছি, ১৭টি গরিব মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। এতদিনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সম্মান দিয়ে ধন্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা চত্বরে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে মাথায় দই চেপে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেছি। যখন আমি নিজে টাকার জন্য স্কুলে যেতে পারিনি, তখন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমি আয় করে স্কুল প্রতিষ্ঠা করবো। যেন আমার মতো টাকার অভাবে শিক্ষার্থীরা ঝরে না যায়।

একুশে পদক বিজয়ী জিয়াউল হককে গণসংবর্ধনার আয়োজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম চাষিদের সংগঠন ‘ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশন’। এ সময় শিবগঞ্জ পৌরসভা, জি.কে ফাউন্ডেশন, শিবগঞ্জ পৌরসভা, বসুন্ধরা শুভসংঘ মডেল ক্লিনিক, গৌড় ম্যাংগো সিটি, শেখ রাশেল শিশু পরিবারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী, নারী উদ্যোক্তা তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এছাড়াও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান জিয়াউল হককে নগদ ১৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন। এ সময় ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এফ এম আবু সুফিয়ান, শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম ও ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব।

জিয়াউল হক দই বিক্রির টাকা দিয়ে ১৯৬৯ সালে প্রথমে নিজের গ্রামে একটি সাধারণ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে সমাজসেবা শুরু করেন তিনি। এলাকার স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়া, স্কুল-কলেজে বেতন দেওয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দিয়ে আসছেন তিনি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সমাজসেবায় একুশে পদক গ্রহণ করেন জিয়াউল হক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here