![ট্রেনের নিচে দুই সন্তানসহ ঝাঁপ দিল মা, বাবা গ্রেপ্তার](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2023January/untitled-2-20230114124547.jpg)
ডেস্ক রিপোর্টঃঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে মেয়ে-ছেলেসহ মা সুমি আক্তার ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের ঘুমটি নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মৃত সুমি আক্তারের স্বামী রাশেদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে সুমি আক্তারের স্বামী ও শাশুড়িকে আসামি করে লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সুমি আক্তারের বাবা আজিজুল ইসলাম।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে অটোরিকশায় করে বুড়িমারীর দিকে যান সুমি আক্তার। তারা বুড়িমারী ঘুন্টি নামকস্থানে ছেড়ে দিয়ে বুড়িমারী রেললাইনে যান। এ সময় লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনের সামনে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঝাঁপ দেন সুমি আক্তার। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে সুমি ও তার মেয়ে তাসিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হয় তার ছেলে তৌহিদ। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পাটগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গিয়ে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। আহত শিশু তৌহিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত তৌহিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তৌহিদের মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলের কয়কজন জানান, শীতের কুয়াশার কারণে রেল লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাদের ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। ওই সময় কোনো পুরুষ ছিল কিনা তাও কুয়াশার কারণে দেখা যায়নি।
পুলিশ জানায়, সুমি আক্তার তার মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে আত্নহত্যা করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী রাশেদুজ্জামানের সঙ্গে ঝগড়া হয় তার। ওপর একটি সূত্রে জানা গেছে ঝগড়ার একপর্যায়ে সুমির শাশুড়ী (রাশেদুজ্জামানের মা) সুমিকে মারধরও করেছিলেন। সকালে ওই ঘটনার জের ধরে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় সুমি।
কী কারণে আত্মহত্যা করতে পারে এমন প্রশ্নের জব্বাবে সুমি আক্তারের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি থানায় অভিযোগ করেছি, পুলিশ এই হত্যার তদন্ত করবে। কেন হত্যা করেছে তারাই বের করবে। আমি বিশ্বাস করি পুলিশ এই হত্যার তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি দেবে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নেই।
লালমনিরহাট রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলী বিষয়টি নিশ্চিত বলেন, সুমি আক্তারের স্বামী রাশেদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমান রাশেদুজ্জামান সদর রেলওয়ে থানায় আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাকে আদালতে তোলা হবে। এ মামলার অপর আসামি সুমি আক্তারের শাশুড়ী রাশেদা বেগমকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।