শীতলক্ষ্যা নদী দুষণের অভিযোগে দেশের অন্যতম বৃহৎ শাড়ী প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান জনি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে(জনী প্রিন্ট) ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে ওই প্রতিষ্ঠানের ডাইং কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লার লালপুরে অবস্থিত জনি টেক্সটাইলের কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক(মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) মুনীর চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এই জরিমানা ও কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এক বছর পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট অভিযান শুরুর পর এটিই টাকার অঙ্কে সর্ব্বোচ্চ অর্থদন্ড।
মুনীর চৌধুরী জানান, জনী টেক্সটাইল মিল লিমিটেড গত ১০ বছরে আনুমানিক নয় লাখ আটাশ হাজার ঘণমিটার দুষিত তরল বর্জ্য নিঃসরণ করেছে। যা স্থানীয় লালপুর খাল দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে সরাসরি পতিত হয়। তিনি আরও জানান, কারখানাটিতে উৎপাদন শুরুর পর থেকে গত ১০ বছর যাবৎ কোনও বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট নেই এবং পরিবেশ ছাড়পত্রও নেই। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এ কারখানা দুষণ সৃষ্টির জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক, যা লাল শ্রেণীভূক্ত হিসেবে চিহ্নিত। এ কারখানায় দৈনিক ১ লাখ ২০ হাজার গজ থান কাপড় ও শাড়ী ডাইং ও প্রিন্ট করা হয়।
জনী প্রিন্ট কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুষণের অপরাধ স্বীকার করেন এবং ভবিষ্যতে পরিবেশ দুষণ নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকার করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুনীর চৌধুরী জানান, এ কারখানা থেকে নিঃসৃত তরলবর্জ্য পরীক্ষা করে দ্রবীভূত অক্সিজেনের কোনও উপসি’তি পাওয়া যায়নি। অথচ শীতলক্ষ্যা নদীতে জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ন্যুনতম ৫ মিলিগ্রাম/লিটার বা ততোধিক মাত্রার অক্সিজেন থাকা অত্যাবশ্যক। তিনি আরো জানান, কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বর্জ্য পরিশোধন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচাক প্লান্ট স্থাপনে অবহেলার জন্য তিরস্কার করা হয়েছে। এছাড়া আগামী ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই ইটিপি পস্ন্যান্ট স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে কোনওভাবেই আর বর্জ্য না ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ধার্য্য সময়ের মধ্যে ইটিপি স্থাপনে ব্যর্থ হলে কারখানার গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ এবং মালিকসহ দায়ী কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/মাকসুদুর রহমান কামাল/নারায়ণগঞ্জ