মোঃআশরাফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ::

সরিষা ফুলের হলুদ হলুদে অপরূপ সাজে রয়েছে মাঠের পর মাঠ জুড়ে। দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ। সরিষার ভালো ফলনে কৃষকদের মুখেও সোনা রাঙা হাসি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলসহ বরেন্দ্র অঞ্চল ও নদীর পাড়ে সরিষার আবাদ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চাষীরা বলছেন, চরাঞ্চলসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষা চাষে খরচ ও পরিশ্রম দু’টোই কম হওয়ায় চাষীদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছিল ২৪ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৩০ হাজার সাড়ে ৪’শ হেক্টর জমিতে এবং ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে ৪৫ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন। এবার৫ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশী হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর, নাচোলে ৯ হাজার ৫০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৫ হাজার ১’শ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর ও ভোলাহাটে ২ হাজার ৩’শ ৪০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

সরেজমিনে নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের হাটবাকৈল দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদ আর হলুদ ও ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সরিষা ক্ষেত। আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে। আর সেই জমিতেই অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। মাঠে সরিষার দানা বেঁধেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভাল ফলনের আশা করছেন চাষিরা।

চাষি আব্দুল খালেক জানান, প্রতিবছর তার জমিতে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন। এবার ১০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪/৫ হাজার টাকা। শুধুমাত্র বীজ ও আর সামান্য সার দিলেই সরিষা আবাদ করা যায়। আগাম আবাদের কিছু অংশ কাটা হয়েছে এবং বাকি ১৫ দিন পর কর্তন শুরু হবে।

আরেক চাষী আলাল উদ্দিন জানান, ফলন পাওয়া যায় বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৭ মণ। তিনি আরো জানান, অগ্রহায়নের মধ্য ভাগ থেকে সরিষার চাষ শুরু করা হয় এবং পৌষ মাসের শেষ ভাগে কাটা শুরু হয়েছে। বাকি মাঘ মাসের প্রথম দিকে মাড়াই শুরু হবে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, সরিষা চাষে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। উপসহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত খোঁজখবর রেখেছেন। এ বছরও সরিষার ভালো ফলনের হাতছানি দিচ্ছে।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে, যা ইতিবাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে আরেকটি সাফল্য। বারি ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ জাতের এবং এবার বিনা ১১ নতুন জাতের সরিষা জেলায় আবাদ হয়েছে। দেশী জাতের সরিষার ৭০ থেকে ৭৫ দিনে ফসল উৎপাদন এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের ফলন হয়ে থাকে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here