পাইকগাছার চাঁদখালী হাটে বর্তমানে সরকারী ১১টি চাঁদনী, মহিলা মার্কেট, পাকা রাস্তা, ড্রেন এবং অন্যান্য বেসরকারী অফিসসহ কৃষি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ শাখা রয়েছে। পাশ্ববর্তী সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রাচীন বড়দল হাট বন্ধের উপক্রম হওয়ায় এ হাটের গুরুত্ব এবং এখানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর সরকার এ হাট থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করছে। এমতবস্থায় চাঁদখালী হাটের এক টুকরো জায়গা পাওয়ার জন্য অবৈধ দখলদার ও প্রভাবশালী মহল তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী বাজারের সরকারী সম্পত্তি রক্ষায়, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবীতে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যবসায়ীরাসহ এলাকাবাসীরা এসব অভিযোগ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, চাঁদখালী দক্ষিণ খুলনার একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ যা খুলনা মহাগনরী থেকে প্রায় ৭৭কিলোমিটার দক্ষিণে কপোতাক্ষ নদের তীরে পাইকগাছা, কয়রা মেইন রোডের উপর অবস্থিত। বৃটিশ আমল থেকে চাঁদখালী বনবিভাগীয় সাব ডিভিশন ছিল এবং একজন ম্যাজিষ্ট্রেট এখানে বসতেন এবং ফরেষ্ট রেভিনিউ আদায় এবং সকল বনবিভাগীয় কেস পরিচালনা ও নিষ্পত্তি করতেন। প্রাচীনকাল থেকে এখানে ১৬বিঘা সরকারী জমির উপর বিশাল গরুর হাট, বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, দাতব্য চিকিৎসালয়, পোষ্ট অফিস, তহসিল অফিস, কমিউনিটি ক্লিনিক অবস্থিত। তাছাড়া আছে চাঁদখাল বহুমূখী হাইস্কুল যেখানে বর্তমান এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র। এক সময় চাঁদখালীতে সিল রাজস্ব অফিস ছিল। উক্ত অফিস বন্ধ হওয়ার পর ইতোমধ্যে সরকারী অফিস ভবনটি এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মহল গ্রাস করে নিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, প্রখ্যাত এ হাটে বর্তমানে সরকারী ১১টি চাঁদনী, মহিলা মার্কেট, পাকা রাস্তা, ড্রেন এবং অন্যান্য বেসরকারী অফিসসহ কৃষি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ শাখা আছে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রাচীন বড়দল হাট প্রায় বন্ধের উপক্রম ফলে চাঁদখালী হাট বাজারের গুরুত্ব বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ দিনে দিনে চাঁদখালীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতি বছর সরকার এ হাট বাজার থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে থাকেন। দিনে দিনে চাঁদখালী হাট-বাজারের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানে এক টুকরো জায়গা পাওয়ার জন্য অবৈধ দখলদার ও প্রভাবশালী মহল তৎপর হয়ে উঠেছে। সম্মেলনে আরো বলা হয়, তাই সরকারী ১নং খতিয়ান ভুক্ত মূল্যবান সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার জন্য একদিকে জাল, তঞ্চকীপূর্ণ দলিলপত্র ও কাগজ সৃষ্টি করে এবং জবরদখল করে ২৭ ও ৩৫ দাগসহ গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান কয়েকটি স্থানে রাতে ও দিনে তড়িঘড়ি করে স্থায়ী ভাবে পাকা স্থাপনার কাজ শুরু করে, স্থানীয় বাজার কমিটি ও ইউনিয়ন পরিষদ একাজে বাধা প্রদান করলে এসব প্রভাবশালীগণ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব অবৈধ স্থাপনা বন্ধ করার পদক্ষেপ গহন করলেও তারা তা মানতে রাজী হয় না। অতঃপর বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানালে তিনি নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া কথা বলেন। তাররপরও দখলকারীরা কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। চাঁদখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২৯অক্টোবরের একসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই অবৈধ স্থাপনা প্রতিহত করা ও সরকারের বিভিন্নস্তরে জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং সে মোতাবেক পরিষদের চেয়ারম্যান মুনছুর আলী গাজী ইতোমধ্যে সংশ্লিস্ট দপ্তরে চিঠিপত্র পাঠিয়েছেন। তারপরও দখলবাজরা নিরস্ত হয়নি ফলে চাঁদখালীবাসির পক্ষ থেকে আমরা দখলবাজদের প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করি এবং কোটি টাকার সরকারী সম্পদ সুরক্ষার জন্য আইনগত সবকিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক অধ্যাপক শেখ দিদারুল আলম, এডভোকেট জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক জুলফিকার আলী, আলম খান প্রমুখ।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শিমুল কাণ/খুলনা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here