চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ইটভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে। একটি অসাধু চক্র সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই আবাদি জমি ও জনবসতিতে ব্যাঙের ছাতার মত ইট ভাটা নির্মাণ করায় ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হয়ে পড়েছে পরিবেশ। আবাদি জমির উর্বর মাটি দিয়ে ইট তৈরি হওয়ায় আশপাশের আবাদিী জমির ঋৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। ফলে বিপর্যয়ের শিকার হাটহাজারী কৃষিখাত। সুত্র মতে,৪০ হাজার ৯৩২ হাজার ৮০০ হেক্টর আবাদি জমি। উপজেলার ২/৩টি ইউনিয়ন ছাড়া এলাকার অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোর ৬০ জন মানুষই কৃষি কাজের সাথে জড়িত হওয়া সর্তেও ইট ভাটরা কারনে কৃষি ভিক্তিক উৎপাদন হুমকী মুখে। অনুসন্ধানে জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার কৃষি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় শতাধিক ইটভাটার প্রায় সবক’টিতেই নিয়মিত টপ সয়েল ব্যবহার করছে। যার মধ্যে কয়েকটি ভাটা ছাড়া বাকী একটিও লাইসেন্স নেই। সর্বোচ্চ ২০ টি ভাটার রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ভুমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯২ সালের প্রজ্ঞাপনে ”কৃষি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণ দন্দণীয় অপরাধ!! উল্লেখ থাকার সর্তেও হাটহাজারী উপজেলার কোনো ইট ভাটায় এ নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। উল্টো কৃষি জমি নষ্ট করে যত্র তত্র প্রতিযোগিতামুলক ভাবে ইট ভাটার নির্মাণ কাজ চলছে বলে জানা যায়। অনেক ইট ভাটায় জেলা প্রশাসকের ইট পোড়ানোর অনুমতি(ফায়ারিং) না নিয়েই ইট পোগানো হচ্ছে। ইট পোড়ানো কিংবা ভাটা স্থাপনের পূর্বেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান,ভুমি,স্বাস্থ্যা, ও পরিবেশ কিংবা বন বিভাগের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবরে আবেদন করতে হয়। কিন্ত দেখা গেছে ইট ভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই ইট পোড়ানো শুরু করে। ইতিপূর্বে গড়ে উঠা ভাটা গুলোতে হাইব্রীট,বার্টিক্যাল চ্যাপ,হফম্যান, কিলন,জিকজ্যাক কিলন এবং উন্নত পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের তাগিদ দেয়া হলেও এ মৌসুমেও ভাটা গুলো এ প্রদ্ধতি অনুসরণ কিংবা রুপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এ সব ইট ভাটায় আবাদি জমির উর্বর মাটি (টপ সয়েল) ব্যবহারের কারণে কৃষি প্রধান এ এলাকার মাটি ঋৎপাদন শক্তি হারিয়ে ফেলছে। ফলে আগামিতে ব্যাপক ভাবে ফলন বিপর্যয়ে পড়বে উপজেলার অধিকাঙশ এলাকা। তার পরও পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসন ভাটা গুলো পরিদর্শন না করেই দফতরে বসেই একের পর এক অনুমতি ও ছাড়পত্র দিয়েই চলছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এ ভাবে লোকালয়ে এবং কৃষি জমিতে ইট ভাটা গড়ে তোলায় একদিকে যেমন কৃষি জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা এবং কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। হাটহাজারীর চৌধুরী হাট থেকে চ.বি এলাকা পর্যন্ত ৩০টি ইট ভাটায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি থেকে মাটি কাটা ও ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ইট ভাটা গুলোতে প্রতিদিন ৫০ হাজার মন কাঠ পোড়ানো হয়। ফসলী জমি কেটে বিশাল বিশাল গর্ত করা হচ্ছে। গত কাল উপজেলা সদরের পশ্চিম দেওয়ান নগর এলাকায় কয়েকটি ইট ভাটা ঘুরে এ সব দৃশ্য চোখে পড়ে।

কাঠ পোড়ানো প্রসঙ্গে হাটহাজারী ১১ মাইলস্থ স্টেশন কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ইট ভাটা গুলোতে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান ।

অন্যদিকে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় করলে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে মানুষ। কৃষি জমির উর্বরা নষ্ট এবং ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভাটা গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখ ফরিদ আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আইন না মানার প্রতি হাটহাজারীর বেশ কিছু মানুষের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তিনি মোবাইল কোর্টের মাধ্যামে ব্যবস্থ্য গ্রহণ করা হবে বলে ও জানান।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/মোহাম্মদ হোসেন/হাটহাজারী

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here