শিমুল খান, খুলনা

খুলনায় ঐতিহাসিক জনসমুদ্রে দাড়িয়ে বিরোধী দলীয় নেতা ও চারদলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দুর্নীতিবাজ ও ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। দেশব্যাপী গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। গণজাগরণ থেকে গণবিপ্লব ঘটবে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য আনা বিদেশী টাকা সরকার আত্মসাত ও লুটপাট করেছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ক্ষমতা এ সরকারের নেই। বিএনপিসহ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে পদ্মায় দু’টি সেতুসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সকল প্রকার উন্নয়ন করা হবে। বেগম জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন দিশেহারা। তিনি কাগজ কলম নিয়ে রোড মার্চের গাড়ির নম্বর লিখতে বসেছেন। রোড মার্চের পরে সরকার পতনের যে কোন কর্মসূচির সাথে জনগণকে শামিল হওয়ার আহবান জানান তিনি। ঢাকা-খুলনা রোড মার্চ শেষে খুলনার সার্কিট হাউস মাঠের জনসভায় চারদলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রোববার বিকেলে এসব কথা বলেন।

৩৫মিনিটের বক্তৃতায় বেগম খালেদা জিয়া দেশের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও সরকারের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরেন। রোডমার্চ ও জনভাকে ঘিরে রবিবার খুলনা শহর মানুষের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। মিছিলে মিছিলে পুরো শহর অচল হয়ে পড়ে। সকাল থেকেই রূপসা ব্রিজ, জেলখানা ঘাট, কাস্টম ঘাট, গল্লামারি ও জোড়াগেইট দিয়ে শ’শ মিছিল খুলনা মহানগরীতে প্রবেশ করে। সকাল সাড়ে ৮টায় প্রথম মিছিল সার্কিট হাউজ মাঠে প্রবেশ করে। ১১টার মধ্যেই পুরো মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে। খুলনা মহানগরীর সকল সড়কেই ছিল জনজোয়ার। মানুষের ভিড়ে অঘোষিতভাবেই বন্ধ হয়ে যায় সব স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার। দুপুরের পরে সব অফিসই বন্ধ হয়ে যায়। আড়াই বগকিলোমিটার জুড়ে মাইকের ব্যবস’া থাকলেও জনতার উপচেপড়া ভিড় ছাপিয়ে পড়ে পুরো শহরে। শহরের চারটি স’ানে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তৃতা স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয়।

জনসভাকে ঘিরে খুলনার জনগণ ছিল উচ্ছসিত। মোড়ে মোড়ে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত অসংখ্য তোরন ও ব্যানারে নতুন সাজে সজ্জিত হয় খুলনা মহানগরী। চারদলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন, রোডমার্চে হাজার হাজার মানুষ সরকারের প্রতি বিদ্দেশ প্রকাশ করেছে। দেশের মানুষ চায় এই স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যাবে আর দেশে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি এ পর্যন্ত যে কয়টা রোডমার্চ করেছি প্রতিটা রোডমার্চে মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখেছি। এই রোডমার্চ দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দিশে হারা হয়ে কাগজ কলম নিয়ে বসেছেন গাড়ির নম্বর হিসাব করতে। তিনি দেশের কোনো সমস্যার সমাধান না করে কেচি নিয়ে বসে আছেন যারা বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলবে তাদের বাড়ির লাইন কেটে দেবে। আর কাকে বাড়ি থেকে বেড় করবে তাই নিয়ে ব্যস্ত।

খালেদা জিয়া বলেন, ফখরুদ্দিন মইন উদ্দিন ছিলো একটা অসাংবিধানিক অবৈধ সরকার। তাদের সময় আমাদের অনেকের নামে মামলা দেয়া হয়েছিলো। আওয়ামী লীগের অনেকের নামেও মামলা দেয়া হয়েছিলো। এমনকি নেত্রীসহ ও জেলে গিয়েছিলো। তাদের সকল মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমনকি ফাঁসির আসামীকে মাফ করা হয়েছে। অথচ আমাদের মামলাতো প্রত্যাহার হয়নি। নতুন করে মামলা দেয়া হচ্ছে। সরকারকে বলবো সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। জেল খানায় জামায়াত-বিএনপির যে সব রাজবন্দিকে আটক রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি দিতে হবে। তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হয় সাজা পাবে। আগে কেনো আটক রাখা হবে।

তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই বিএনপি হলো মুক্তিযুদ্ধের দল। আমরাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে আর যারা মানবতাবিরোধী কাজ করেছে আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে। প্রকৃত তথ্যপ্রমাণ সহ আন্তর্জাতিকভাবে সে বিচার করতে হবে। কোনো রকম দলীয় লোকদের দিয়ে সে বিচার হবে না। তিনি বলেন, এই সরকার কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। মুক্তিযুদ্ধের কথা আপনাদের মুখে মানায় না। আপনারা মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই। জিয়াউর রহমান সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেননি রনাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। বিএনপি সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। করবে। আপনারা স্বাধীনতার পরে একবার ক্ষমতায় এসে বিরোধীদলের ৪০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। এবার এখন পর্যন্ত  করেছেন বিশ হাজার। আপনারা প্রতিশোধের রাজনীতি করছেন। আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করি নাই। আমরা উন্নয়নের রাজনীতি করেছি। এখন আপনারা যেহেতু এগুলো শুরু করেছেন তাই প্রকৃত অপরাধীরা যাতে শাস্তি পায় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো। আপনাদের সঙ্গে খুনি রয়েছে।

মিলনকেই নয় অনেক বড় বড় লোককে হত্যা করেছে। স্বৈরাচারী এরশাদ এই ২৭নভেম্বর ডাক্তার মিলনকে হত্যা করেছিলো। মিলন হত্যাকারীকে পাশে নিয়ে গণতন্ত্র হবে না। স্বৈরাচারকে পাশে নিয়ে গণতন্ত্র  চান? বিরোধীদল বানাতে চান? তা হতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, এই সরকার খুলনার কোনো উন্নয়ন করেনি। এ অঞ্চলের রাস্তার কোনো উন্নয়ন হয়নি। তারা নাকি উন্নয়ন করে ভাসিয়ে দিয়েছে। আমি বলবো তারা দুর্নীতির উন্নয়ন করেছেন। নিজেরা টাকা বানিয়েছে। খুলনা এক সময় ছিলো শিল্প এলাকা। এখন শিল্প এলাকা বলা যায় না। মিলকারখানা সব বন্ধ হয়ে রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে পুনরায় মিল কারাখানা চালু করবো। যাতে শ্রমিকরা কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখনই শেয়ার বাজারে ধ্বস নামে লুট হয়। ৯৬ সালে একবার হয়েছিলো আবার এবার হয়েছে। বিএনপির সময় এরকম হয় নাই। সরকারের বড় বড় লোকেরা শেয়ারের টাকা নিয়েছে। তদন্ত হয়েছে অর্থমন্ত্রী ভয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে নাই। কারণ বড় বড় অনেকের নাম বের হয়ে আসবে। শেয়ার বাজারে ৩৩লাখ বিনিয়োগকারীর দেড় কোটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন এই দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিলো এই সরকার আরো পিছিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতে এই দেশ চালাতে অনেক কষ্ট হবে। তারা দশ টাকায় চাল দেয়ার কথা বলেছিলো। কিন’ আপনারা কি দশ টাকায় চাল পান? এখন দ্রব্যমুল্য বেশি না কম। ঘরে ঘরে চাকুরি দেয়ার কথা বলে ছিলো দিয়েছে? দেয় নাই। বরং ছাটাই হচ্ছে। এমনকি সরকারি কর্মচারীদের ছাটাই করেছে। ৪৮০ জনকে ওএসডি করে রেখেছে। নিজেদের লোকদের দুইটা তিনটা করে প্রমোশন দিয়েছে। এরা কাজ বোঝে না। সামরিক বাহিনীতেও একই কাজ করা হয়েছে। যাদেরকে এরকম করা হয়েছে তাদের বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবাইকে চাকুরি ফিরিয়ে দেয়া হবে। যাদের অন্যায়ভাবে প্রমোশন দিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে। তিনি বলেন, কৃষকরা বিনামূল্যে সারতো পায়ই না বরং আমরা যেখানে ২৬০টাকায় ইউরিয়া সার দিতাম সেখানে এখন এক হাজার ষাট টাকা। ধানকাটা হচ্ছে কৃষক ধানের দাম পাচ্ছে না। অথচ চাউলের দাম বেশি। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছে না। তিনি সরকারকে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান কেনার আহবান জানান। তিনি বলেন, এই সরকার দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, তাবেদার, মিথ্যাবাদী সরকার। তারা লুটপাট নিয়ে ব্যস্ত। এখন সব কাজ বিনা টেন্ডারে হচ্ছে। বিনা টেন্ডারে কাজ দেয়া হয়েছে।  সংসদে ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে। দুর্নীতির কথা বলে সংসদে দুর্নীতির পক্ষে আইন পাশ করেছে। বারো হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এই টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলবে।

তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। সিএনজির দাম বাড়িয়েছে। আবার বাড়াবে। তিনি বলেন, রামপালে যৌথভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবন শেষ হয়ে যাবে। সেখানের জীবজন’ পশু পাখি মারা যাবে। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে অনেক পর্যটক আসে তাও আসতে পারবে  না। এখানে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে দেয়া যাবে না। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমি ও পরিবেশবিদেরা আপনাদের সঙ্গে থাকবো। এই সরকার মিথ্যা মামলা ছাড়া আর কিছু করে না। একজন সিনিয়র ব্যারিস্টার বলেছেন, দলীয় বিচারক হলে সুবিচার পাওয়া যায় না। আমরাও সুচিবার পাচ্ছি না। বিচার বিভাগ ও ইলেকশন কমিশনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। পুলিশ ও  সেনাবাহিনীতে সব কিছু দলীয়করণ করা হয়েছে। তারা একদলীয় সরকার কায়েম করবে। সেই জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর থেকে আস’া উঠিয়ে দিয়েছে। জানি না তাদের আল্লাহর ওপর আস’া আছে কিনা।

খালেদা জিয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দিনের পর দিন হরতাল জালাও পোড়াও করেছে। ঘর বাড়ি পেট্রোল পাম্ব জালিয়ে দিয়েছে। কে এম হাসানের অধীনের নির্বাচন বর্জন করেছে। তখনকার ইসি মানবে না। লগি বৈঠা নিয়ে কি তান্ডব চালিয়েছে। এখন তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। আমি বিশাল এই জনসভায় বলে দিতে চাই আওয়ামী লীগের অধীনে এই দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। সকলের কাছে গ্রহণ যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তারা বহু লুটপাট করেছে সেগুলি ভোগ করার জন্য চিরস’ায়ী ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাদের চিরস’ায়ী ক্ষমতায় থাকার সে স্বপ্ন পূরণ হবে না। তা নাহলে এই দেশ ছেড়ে চলে যাবে। ছেলে মেয়ে সব বিদেশে।  ভারত থেকে আনা ঋনের টাকা দিয়ে রাস্তাঘাট ঠিক করার পরামর্শ দিয়ে সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ঋণের টাকা যখন পেয়েছেন আগে বাংলাদেশের রাস্তা ঠিক করেন। পরে দেখা যাবে অন্যদের জন্য রাস্তা করা যাবে কি না। যেহেতু তারা ঋণে টাকা দিয়েছে সে টাকার আমাদের পরিশোধ করতে হবে। আমরা কোথায় খরচ করবো সেটা আমাদের ব্যাপার। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর টাকার লোভ সামলাতে পারে নাই। আত্মসাত করেছে, লুটপাট করেছে। বিশ্বব্যাংক তদন্ত করে দেখেছে বড় বড় লোক এর সঙ্গে জড়িত। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস’া না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক টাকা দেবে না। তিনি বলেন, রূপসা সেতু, যমুনা সেতু আমরাই করেছি। তারা হরতাল দিয়েছিলো। তারাতো করতে পারে না। অন্যরাও যাতে করতে না পারে সেজন্য হরতাল দেয়। আমরা দুই টা পদ্মা সেতু বানাবো। একটা মাওয়া। একটা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া। তিনি বলেন, টিপাইমুখ নিয়ে সরকার কোনো কথা বলছে না।

সিলেটে এক তারিখে হরতাল। সিলেট বাসী আন্দোলন করছে। সরকার নীরব। আমি বহুবার এ নিয়ে কথা বলেছি। চিঠি দিয়েছি। শুনে এসেছি উত্তর দিয়েছে। জানি না কি লিখেছে। টিপাইমুখ নিয়ে শক্ত অবস’ান নেন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। যদি না পারেন তাহলে ক্ষমতা ছাড়েন। জনগণ দেখবে কি করা যায়। টিপাইমুখ বাধ নির্মাণের সরঞ্জাম আমাদের উপর দিয়ে নিবে। ভারী যন্ত্রপাতি এখান থেকে নিতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, ভারতের জনগণের সঙ্গে জনগণের বন্ধুত্ব থাকুক সেটা আমরা চাই। বন্ধুত্বের ভিত্তিতেই সব কাজ করতে চাই। আশুগঞ্জ থেকে করিডোর দিয়ে দিয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে যাবে। সেখানে সীমান্তের গ্যাস সব তুলে নিয়ে যাবে। টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ করবে সেখাণে ভারী যন্ত্রপাতি নিতে হবে। সরকারের উচিত অবিলম্বে এই পরিকল্পনা বন্ধ করা। আইলা উপদ্রুত এলাকার মানুষ কি কষ্টে আছে। সরকার কিছুই করেনি। বাধ করেনি। পুনর্বাসন করেনি। কোনো ব্যবস’া করেনি। খুলনা এবং সাতক্ষীরায় আয়লায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনবার্সন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। বাধ ও এর সাথে যাবতীয় সমস্যা সমাধান করতে হবে। সাতক্ষীরা ও খুলনায় জলাবদ্ধতা রয়েছে। এই জলাবদ্ধতা দূর না করলে কোনো ফসল হবে না। আমরা আটকোটি টাকা খরচ করে জলাবদ্ধতা দূর করেছিলাম। তিনি বলেন, যে সরকার সব কিছু দিয়ে দিতে চায়। অন্যদেশের হাতে নিজেদের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে চায় তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। আমরা এই দেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল দেশে পরিণত করবো। আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে মুক্তি করেছি। আবার উন্নয়নের ব্যবস’া করবো। তাই মা বোন সকলকে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। কর্মসূচি আজ ঘোষণা করবো না। পরে আমি যে কর্মসূচি দেব সেই কর্মসূচিতে সবাইকে অংশ নিতে হবে।

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপির সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তৃতা করেন এলডিপির চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাজির আহামদ, খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর, স’ায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ, তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান,  বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম আল মামুন, ইসলামী এক্যজোটের মহাসচিব আব্দুল লতিফ নিজামী, জাগবা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেঃ (অবঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, লেবার পার্টির সেক্রেটারি ডা. মোস-াফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বেগম রাজিয়া ফয়েজ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, এম নুরুল ইসলাম দাদু, অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, মোহাম্মাদ শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, মশিউর রহমান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর শামসুল ইসলাম এমপি, ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, যুবদল সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জামায়াতের সাবেক এমপি খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার, সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী, এডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, শফিকুল আলম তুহিন, আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, আজিজুল হাসান দুলু, সাইদুর রহমান, আরিফুজ্জামান আরিফ, মুজিবর রহমান, এমরানুল কবীর নাসিম। কুরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা তৌহিদুজ্জামান। জনসভা মঞ্চে উপসি’ত ছিলেন বিএনপির স’ায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, লে. জেনারেল (অব:) মাহবুবুর রহমান, এমকে আনোয়ার, ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক এমএ মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, খায়রুল কবির খোকন, আবুল খায়ের ভূইয়া এমপি, নূরী আরা সাফা, শরীফ শাহ কামাল তাজ, শিরীন সুলতানা, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, আলী আজগর লবী, সাইফুল ইসলাম নিরব, আবু নাসের মোঃ রহমাতুল্লাহ, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, ড. মামুন রহমান, সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, খুলনা মহানগরী জামায়াতের উত্তর জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, দক্ষিণ জেলা আমীর মাওলানা আ খ ম তমিজউদ্দিন, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, এসএম শফিকুল আলম মনা, আমীর এজাজ খান। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শ্রমিক নেতা মোদাচ্ছের হোসেন ও যুবদল নেতা ওমর ফারুক তুর্যের পরিবারের সদস্যরা সন্ধ্যায় সার্কিট হাউজে এসে বিরোধী দলীয় নেতা ব্‌েগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তারা হত্যকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং বর্তমান প্রশাসনের নিরবতার বিষয়টি তুলে ধরেন।

জোট ও সমমনা নেতারা যা বললেন : এলডিপি সভাপতি কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, ৭১ সালে ডিসম্বর মাসে শহীদ জিয়া সিলেটকে মুক্ত করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান খুনীদের সাধারণ ক্ষমতা করে দিয়ে সন্ত্রাসীদের আজ উৎসাহিত করছেন। মাওলানা ইসহাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতের সাথে আতাত করে কিছুদিনের মধ্যে দেশ লিখে দিতে চায়। মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখিন। এই মহাসমাবেশ প্রমাণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোন নির্বাচন হবে না, হবে না, হবে না। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পবিত্র ভুমি থেকে সিলেট থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই সরকারের পতন নিশ্চিত করে জনগণ ঘরে ফিরবে। সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম বলেন, এই সরকার সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ। এ দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করতে চায়। রাজিয়া ফয়েজ বলেন, এই সরকারের হত্যা-জুলুমের রাজনীতির বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ ফুসে উঠেছে। তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে এ সরকারকে বাধ্য করা হবে। শফিউল আলম প্রধান বলেছেন, এই মহাসমাবেশে লাখ লাখ লোক সরকারকে জানান দিয়েছেন শেখ হাসিনার দিন শেষ খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শামসুল ইসলাম এমপি বলেন, কেয়ারটেকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। কেয়ারটেকারের জন্য আমাদের অনেক কর্মী জীবন দিয়েছে, অনেকে রক্ত ঝরাচ্ছে। জের জুলুমের শিকার হয়েছে। এখন কেউ ইচ্ছা করে এটি বাদ দিলে আমরা মেনে নিতে পারি না।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here