ভোলা : ভোলায় মেঘনা নদী থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জেলে কাছ থেকে ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যনত্ম মুক্তিপণ আদায় করেছে দস্যুরা। এই অবস্থায় নদীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা।অন্য দিকে গত এক মাসে অন্তত ১১৫ জন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলার কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চর মনুরা মাছঘাটের আবদুর রহিম বলেন, মেঘনায় ইলিশ পড়া সত্ত্বেও জেলেরা নদীতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মেঘনার সোনার চর থেকে নাসির মোল্লা ও তাঁর ভাই খলিলুর রহমানের নৌকায় দস্যুরা হামলা চালায়। খলিলকে বেদম মারধর করে ছেড়ে দিলেও নাসিরকে অপহরণ করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে।ওই ঘাটের আফজাল হাওলাদারসহ একাধিক জেলের ভাষ্য মতে, নৌকার মালিক ও আড়তদারদের মুঠোফোনের নম্বর দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলছে। অন্যথায় জেলেদের অপহরণ করছে। দস্যুরা এক মাসে ঘাটের ১০টি নৌকায় হামলা চালিয়ে ১০ জনকে অপহরণ করে।

তজুমদ্দিনের মহেশখালী মাছঘাটের কয়েকজন মাঝি জানান, ৫ ফেব্রম্নয়ারি রাতে জলদস্যুরা তাঁদের ঘাটের সাতটি নৌকায় হামলা চালিয়ে সাতজন জেলেকে অপহরণ করে। এ ঘাট থেকে গত এক মাসে ১০ জন জেলে অপহূত হয়েছেন।জেলেরা আরও জানান, দস্যু রম্নবেল বাহিনী গত এক মাসে তজুমদ্দিনের সস্নুইসগেট, চৌমহনী, হুজুরের খাল, হানিফ মাঝির খাল, কাটাখালী মাছঘাট থেকে প্রায় ৮০টি নৌকায় হামলা চালিয়ে ৮০ জন জেলেকে অপহরণ করে।

লালমোহন উপজেলার বাত্তির খালের মাছ ব্যবসায়ী মো ফারুক মাঝি বলেন, কোস্টগার্ড জাল ও জাটকা ধরার কাজে ব্যস্ত থাকে। পুলিশ মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও তা আরও বাড়ানো উচিত। ওই ঘাটের জেলে ইউসুফ সাজি জানান, এক মাসে তাঁদের ঘাটের তিনটি নৌকায় ডাকাতি হয়েছে। তিনজন অপহূত হয়েছেন।জেলেদের ভাষ্য, দৌলতখানের ভবানীপুর নতুন ঘাট, গুপ্তগঞ্জ ও হাজিপুর ঘাটের ছয়জন জেলে, মনপুরা উপজেলার কলাতলী, রামনেওয়াজ ঘাটের তিনজন ও বোরহানউদ্দিন মির্জাকালু ঘাটের দুইজন জেলে অপহূত হয়েছেন।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেড়েছে অপহরণ:

ভোলার প্রতিটি ঘাটে দস্যুদের প্রতিনিধি আছে।দস্যুরা অপহূত ব্যক্তির পরিবারকে মুঠোফোনের নিন্দিষ্ট নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলে। এরপর তাদের প্রতিনিধিরা টাকা উত্তোলন করতে পারলেই অপহূত ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জেলে বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং শুরম্ন হওয়ার পর অপহরণের সংখ্যা বেড়েছে।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সুলতান মাহমুদ নদীতে দস্যুদের উৎপাত বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছি তাদের সমস্যা শোনার জন্য। আশা করি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারব।

’পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নদীতে টহল বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

শিপুফরাজী/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here