ডেস্ক রিপোর্ট:: রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের আয় কমেছে। তবে তার বেড়েছে গাড়ি-বাড়ি ও টাকা সম্পদ।
তিনি গত নির্বাচনের হলফনামাগুলোতে ব্যবসা দেখালেও এবার চাকরি দেখিয়েছেন। ২০০৮ সালে তার কোনো গাড়ি না থাকলেও ২০২৩ সালে তিনি চারটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। তার স্ত্রীর নামেও আছে একটা বিলাসবহুল গাড়ি।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে টানা ৩ বার সংসদ সদস্য এনামুল হক এবার মনোনয়ন পাননি। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ। তবে এনামুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন। নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হলফনামা সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সংসদ সদস্য হওয়ার আগে এনামুলের ব্যাংক ঋণ ছিল ৩৭ কোটি টাকার ওপর। ২০১৩ সালে তিনি পুরোপুরি ঋণমুক্ত হন। তবে ২০১৮ সালের হলফনামায় আবার ঋণ দেখান তিনি। আগে গাড়ি না থাকলেও এমপি হওয়ার পরে ২ কোটি টাকার বেশি দামের গাড়িও রয়েছে তার।
২০০৮ সালের হলফনামায় এনামুল হক ১১টি ব্যাংকে একক, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/পরিচালক হিসেবে ঋণ দেখান ৩৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। তবে ২০১৩ সালের হলফনামায় ঋণ দেখাননি তিনি। ২০১৮ সালে আবার তিনি ঋণ দেখানো শুরু করেন। ওই বছর তিনি বাড়িভাড়া থেকে আয় দেখান ১৫ লাখ, ব্যবসা থেকে ২৪ লাখ ও সংসদ ভাতা ১৬ লাখ টাকা। এছাড়া নগদ দেখান ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮ টাকা। স্ত্রীর আয় দেখান ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা দেখান ৭ লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকা। স্ত্রীর নামে দেখান ৪ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার দেখান নিজের ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৭ কোটি ৬৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলের নামে শেয়ার দেখান ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তখন আমানতে তার বিনিয়োগ ছিল ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৬ ও স্ত্রীর ৭৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন শুধু এনা বিল্ডিং প্রডাক্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংকে তার ঋণ ছিল ২১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৬ টাকা।
এবার এনামুল হকের বাড়ি ভাড়া থেকে আয় ১৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ব্যাংক আমানত ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৪২ টাকা। চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৩ হাজার এবং সংসদ ভাতা ২৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। নগদ রয়েছে নিজের ২৫ লাখ ও স্ত্রীর ৩ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা নিজের ১১ লাখ ৫৯ হাজার ও স্ত্রীর ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ার নিজের ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার। আর নির্ভরশীলের শেয়ার ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার। এ ছাড়া স্থায়ী আমানতে স্ত্রীর বিনিয়োগ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
২০০৮ সালে তার একটি গাড়িও ছিল না। এবার তার নামে হয়েছে একটি টয়োটা হার্ড জিপ, যার দাম ৬৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ হার্ড জিপ। যার দাম ২ কোটি ১২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং একটি টয়োটা হার্ড জিপ। যার দাম ৯০ লাখ টাকা।
স্ত্রীর নামেও ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকার টয়োটা জিপ দেখিয়েছেন তিনি। নিজের ৪০ তোলা ও স্ত্রীর ৪০ তোলা স্বর্ণ থাকার কথা হলফনামায় লিখেছেন তিনি। এমপি এনামুল এবার কৃষি জমি দেখিয়েছেন ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার। তার অকৃষি জমি রয়েছে ৬৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকার। বর্তমানে ব্যাংকে তার ঋণ ৩২ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।