seiamস্টাফ রিপোর্টার :: শরীয়তপুরে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে দুই হাত হারানো সিয়াম খানকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে এ অর্থ পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হয়।

মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব শফিক। সঙ্গে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী সিফাত মাহমুদ।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

ইউনাইটেড নিউজসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম বিষয়টি ফলাও করে প্রকাশ হয়। প্রকাশিত এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে গত মে মাসে আদালতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিফাত মাহমুদ। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তী আদেশ দেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ওই এলাকায় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবহেলা ঘোষণা করা হবে না এবং সিয়াম খান আহত হওয়ার জন্য কেন দায়ী করা হবে না এবং সিয়াম খানকে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।

এ জন্য গত ২৯ মে আদালত অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড সাপ্লাই), জেনারেল ম্যানেজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, ও অ্যান্ড এম) নড়িয়া সাব-জোনাল অফিস শরীয়তপুর, সেক্রেটারি শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

এ ধারাবাহিকতায় তারা আদালতে হাজির হন। ৩০ মে শুনানিতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আইনজীবী আদালতে বলেন, অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। ওই চারজন ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন জানান। ওই দিন আদালত ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে ৪ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

আজ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ এপ্রিল বিকালে নড়িয়ার বিঝারী এলাকায় ঝড়ে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় বিঝারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার মজিবুর রহমান বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জেলা কার্যালয়ে ফোনে জানান। পর দিন সকালে ওই সঞ্চালন লাইনের মেরামত করা হবে বলে মজিবুর রহমানকে জানানো হয়। কিন্তু সঞ্চালন লাইন মেরামত না করেই পর দিন ৬ এপ্রিল দুপুরে লাইনটি চালু করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। ওই সময় ঝড়ে পড়ে যাওয়া সঞ্চালন লাইনের তারে জড়িয়ে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার বিঝারী গ্রামের হতদরিদ্র ফারুক খানের ছেলে নড়িয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম মারাত্মক আহত হন। এরপর তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন। পরে ১২ এপ্রিল তার দুটি হাতের কব্জির উপরের অংশ কেটে ফেলা হয়। এতে সিয়াম সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here