নওগাঁর : প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আসুন সর্বদলীয় সরকার গঠন করি।
আপনারা যে মন্ত্রানালয় চাইবেন সেটাই দেয়া হবে। ভোট কারচুপির দিন শেষ হয়ে গেছে।
এখন স্বচ্ছ ব্যালট বাস্কে নির্বাচন হবে। তিনি বলেন বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচন চান না। উনি হরতাল চান। লাশ না দেখলে তার ঘুম হয় না।
আলোচনার জন্য টেলিফোনের অনুরোধ করা হলেও তিনি না এসে হরতাল দিলেন। হরতাল দিয়ে কি লাভ হলে পেলেন। উল্টো তারা কয়েকজন নিরোহী মানুষের প্রাণ কেড়ে নিলেন। বিএনপি মানেই সন্ত্রাস; বিএনপি মানেই রাতে ঘুম হারাম হওয়া।

প্রধান মন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার  বিকেলে নওগাঁর পোরশা ডিগ্রী কলেজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা গুলো বলেন।

তিনি আরো বলেন, আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে পোরশা ডিগ্রী কলেজ সহ দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে স্কুল সরকারী এবং জেলায় একটি করে উন্নত মানের মসজিদ তৈরী করা হবে। বিএনপি নেত্রীর মনে শানিত্ম নেই। আজও হরতালে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।

সে সব দেখে তার কর্মী বাহিনীরা দাঁত উচিয়ে হাসে। বিএনপি জামাত ও হেফাজত বায়তুল মোকাররমে বোমা মেরেছে, পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিয়েছে। এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখব। তিনি সেদিনের টিলিফোন আলাপের কথা উলেস্নখ করে বলেন দুপুর একটায় ফোন করলে তিনি ফোন ধরতে পারেনা।
তিনি সে সময় ঘুমিয়ে থাকেন। একটি টেলিফোন ধরতে তার রাত নয়টা বাজে। আমার প্রশ্ন টেলিফোন ধরতেও কি তৈরী হতে হয় টেলিফোনেতো আর মানুষ দেখা যায়না।
আমি টেলিফোনে হরতাল প্রত্যাহার করতে বলেছিলাম কিন্তু উনি তা করেননি উনি হরতাল করবেনই এবং মানুষ হত্যা করবেনই। মানুষের লাশ না দেখলে নাকি উনার ঘুম হয়না। ৩২মিনিটের বক্তব্যে তিনি আরো বলেন ২০০৭সালে উনিও গ্রেফতার হয়ে ছিলেন আমিও গ্রেফতার হয়ে ছিলাম। উনি সহ উনার দুই ছেলেকে সে সময় জেলে নিয়ে গেল। উনি কি তা এখন ভুলে গেছেন? তবে তিনি কেন আবার সে সময় টেনে আনতে চান।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ এদেশের জনগনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে বাংলার স্বাধীনতা এনে দিয়ে ছিলেন। যারা স্বাধীন করে তারাই স্বাধীনতার মর্ম বুঝে। যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে তারা স্বাধীনতার মর্ম কি বুঝবে? তিনি তার সময়েকার উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন আমরা আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে যাবতীয় উন্নয়নের ধারা অব্যহত থাকবে।
তিনি আরোও বলেন বিএনপি ২১ আগষ্ট গ্রেনেট মেরে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে দিন প্রায়ত রাষ্ট্রপতি জিল্লর রহমানের স্ত্রী নারী নেত্রী আইভি রহমান মর্মান্তিক ভাবে নিহত হন। আমি তাকে বলে ছিলাম আপনার জম্ম দিন তো ১৫আগষ্ট নয় ৫ সেপ্টম্বর আপনার জম্ম দিন। কেন আপনি ১৫আগষ্ট মিথ্যা জম্ম দিন পালন করেন। তিনি তার উত্তরে বললেন ১৫আগষ্টই তার জম্মদিন পালন করনেই।

মঙ্গলবার বেলা ২টা ৫মিনিটে হেলিকপ্টারে যোগে পোরশা উপজেলা হেলিপ্যাডে তিনি প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা অবতরন করেন। উপজেলা ডাকবাংলোতে মধ্যাহৃ ভোজে শেষে বেলা ৩টা ৬ মিনিটে জনসভায় যোগ দেন । এর আগে প্রায় ১শ’ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্ধোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন  করেন।

তিনি জন সভার মঞ্চে এসে উপস্থিত হলে এ সময় চারিদিক থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী, সমর্থক বিভিন্ন সেস্নাগান দিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধামন্ত্রীও হাত নেড়ে জনতার শুভেচ্ছার জবাব দেন।

প্রধান মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বহু পূর্ব হতে সারা নওগাঁ জেলায় যেন আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। সপ্তাহব্যপী চলে দলীয় নেতাকর্মীদের আনন্দ মিছিল রাসত্মায় রাসত্মায় তৈরী হয় সহস্রাধীক তোরন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সফল ও সার্থক করতে মাঠে নামে বিভিন্ন গোয়েন্দা দল। পাশাপাশী পুলিশ বাহিনীকে নিরলস প্ররিশ্রম করতে দেখা যায়। বিরোধী দলের হরতালকে উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখার জন্য পায়ে হেঁটে ওই দিন সকাল হতেই পোরশা কলেজ মাঠে জনতার ঢল নামে।
৮০বছরের বৃদ্ধ থেকে ৬বছরের শিশুরাও প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মাঠের দিকে ছুটে আসেন। কানায় কানায় মাঠ ভির্তি দর্শক ঘন্টার পর ঘন্টা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার পর দর্শকের ভিড় মাঠ পেরিয়ে পাশের রাস্তাসহ সুতরইল মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখার জন্য গাছের ডালে, বাড়ীর ছাদেও সমান তালে মানুষকে অধীর আগ্রহে বসে থাকতে দেখা যায়। মহুর্তে প্রধান মন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে পরিনত হয়।

স্থানীয় নেতা কর্মীরা প্রধান মন্ত্রীর আগমনকে নওগাঁ-১আসনের বর্তমান এমপি সাধন চন্দ্র মজুমদারের আর একটি সাফল্য হিসেবে দেখছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব তবিবুর রহমান শাহ্‌ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় তার সফর সঙ্গীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাংগাঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমাদ চৌধুরী এমপি, রাজশাহী সিটি কর্পরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, প্রধান মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুজ্জামান শেখর, কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জিনাত আরা হেনরী, রাজশাহী সিটি করপরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী, সাধারন সম্পাদক আব্দুল মালেক এমপি, ইসরাফিল আলম এমপি, শহিদুজ্জামান সরকার এমপি, ড.আকরাম হোসেন চৌধুরী এমপি, সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি, ইমাজ উদ্দীন প্রমানিক এমপি, সংরড়্গিত মহিলা সংসদ সদস্য শাহিন মোনোয়ারা হক প্রমুখ বক্তব্য রাথেন।

তন্ময় ভৌমিক/
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here