সামগ্রীক উন্নয়নে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগামী সংসদ অধিবেশনে জাতীয় বাজেট ২০১৫-১৬ উপস্থান করা হবে। এ বাজেট নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের থাকে নানান কৌতহল, থাকে মতামত-পরামর্শ। বাজেটে নারী তার কতটুকু অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে পাশাপাশি আগামী বাজেটে তাদের প্রত্যাশা কি? দেশের বিশিষ্ট নারী জনদের কাছে এ সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছেন আ হ ম ফয়সল।
সাকেরা নাহার, কোঅর্ডিনেটর– ক্যাম্পেইন, সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান- সুপ্র।
সাকেরা নাহার বলেন, জন্মগতভাবেই নারী-পুরুষের সম সুযোগ লাভের অধিকার রয়েছে। এটি মানুষের সর্বজনীন মানবাধিকারের অংশ। বাংলাদেশের সংবিধানেও নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সুযোগ এবং অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এরপরেও চিরন্তন বাস্তবতা হচ্ছে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় উন্নয়নে নারীর অবদানকে উপক্ষো করার পাশাপাশি নারীর জন্য সমতাভিত্তিক পৃথক উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হয় কদাচিৎ।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারী অধিকার সমুন্নত রাখতে নানামূখি দাবির প্রেক্ষিতে সর্বপ্রথম ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৪ টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেন্ডার বাজেটের সূচনা করে এবং বর্তমানে ৪০টি মন্ত্রণালয়ে জেন্ডার বাজেট প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য সরকারকে জানাই সাধুবাদ। প্রতি বছর যে বরাদ্দ এ খাতে দেয়া হচ্ছে তা টাকার অংকে বাড়লেও শতকরা হারে কমছে। জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই যেখানে নারী সেখানে বাজেটে নারীর জন্য এ বরাদ্দ পর্যাপ্ত থাকা প্রয়োজন।
সাকেরা বলেন, নারীর অবস্থান, ক্ষমতা এবং প্রেক্ষিত পর্যালোচনা সাপেক্ষে জেন্ডার বাজেট প্রণয়নের কথা বলা হলেও কার্যত জেন্ডার বাজেটকে পৃথক মাপকাঠিতে মূল্যায়ন করার সুযোগ কম। আর তাই মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলেও দেখা যাচ্ছে যে, এখনও নারী উদ্যোক্তারা সহজ শর্তে ঋণ পাচ্ছে না, নারী গৃহশ্রমিকরা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় প্রশিক্ষন পেয়ে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যেতে পারছে না, সম মজুরী পাচ্ছেনা, তাদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না।
সাকেরা নাহার আরো বলেন, বাজেটে বরাদ্দ যতই রাখা হোকনা কেন তার সফল বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে জেন্ডার বাজেটের সুফল নারীরা পাবে না। নারীরা যেন জেন্ডার বাজেটের সুফল ভোগ করতে পারে সেজন্য এ বাজেট বাস্তবায়নে মনিটরিং ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।
সাকেরা নাহার সকলক্ষেত্রে তৃণমূল অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারীর প্রকৃত অবস্থান বিশ্লেষণ পূর্বক চাহিদা ভিত্তিক জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন; জেন্ডার বাজেট মূল্যায়নে স্বতন্ত্র মাপকাঠি নির্দেশ করা; প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বাজেট এবং উপকারভোগীদের তথ্য জেন্ডারভিত্তিক পৃথক করার উদ্যোগ নেয়া; ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য জেন্ডার বাজেটের পরিধি বাড়ানো সহ প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণে বাজেটে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা থাকা আবশ্যক বলে মনে করেন।