ঢাকা: ‘সরকারের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর! তাই দলের  মুখপাত্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফখরুলের এমন ‘অভিযোগ সম্বলিত পদত্যাগপত্র  শেয়ার, লাইক হচ্ছে। এসবের জন্য আওয়ামী লীগের অনলাইন কর্মীদের দায়ী করেছেন মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নামের ফেসবুক আইডি থেকে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের অনলাইন কর্মীদের অবস্থা এতোই  শোচনীয় যে এখন আমার স্বাক্ষর নকল করে বিএনপির লেটারহেডেড ফটোশপ করে পদত্যাগের গুজব রটাতে হয়। এ মানসিকতা নিয়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নও দেখে তারা।

ফখরুল বলেন, কিছু মানুষের পেশা হলো ভাউচার মেলানো মানে সরকারের টাকায় বিড়ি খেয়ে ভাউচারে বেশি খরচ দেখানো। এদের কাছে একটা কম্পিউটার দিয়ে দিন, পরের দিন তারা অনলাইনে আওয়ামী লীগের অতন্ত্র প্রহরী হয়ে যাবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত  জাসাসের যুগ্ম মহাসচিব শায়রুল কবির খান বাংলামেইলকে বলেন, এ প্রচারণা মিথ্যা ও বানোয়াট। এর তীব্র নিন্দা ও  প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি দূরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বহাল এবং তফসিল স্থগিতের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

এব্যাপারে ফখরুল বিরোধী কয়েকজন বিএনপি সমর্থক মনে করছেন, ‘ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে দলের মধ্যে যেসব নেতার অস্বস্তি রয়েছে তাদের সহানুভূতি পেতেই এ ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে।’

তবে ফেসবুকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘পদত্যাগপত্রের’ উৎপত্তিস্থল পাওয়া যায়নি।

তার ঘনিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আত্মগোপন কৌশলে থেকে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছেন।

ফেসবুকে প্রকাশিত ‘পদত্যাগপত্রটি’ বাংলামেইলের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

২ ডিসেম্বর ২০১৩

বরাবর,
বেগম খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
২৮/১ নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা- ১০০০

বিষয়: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে।

আজ ২ ডিসেম্বর ২০১৩। বিএনপিতে আমার শেষ দিন। সুদীর্ঘ ২৪ বছর বিএনপিতে আমার পদচারণার অবসান। আশা করেছিলাম আপনি সংলাপের ডাক দিয়ে জাতিকে ভয়াবহ পরিণতি থেকে পরিত্রাণ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেবেন। তা আর হয়ে উঠল না। সহিংসতাতেই চলে যাচ্ছে দেশ। দেশ জাতি প্রত্যক্ষ  আরো রক্তক্ষয়। আরও জ্বালাও পোড়াও আরও ধ্বংসলীলা আরও লাশ, গুম ও হত্যা।

বিএনপির তৃণমূলের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী নির্বাচনমুখী। অথচ আপনিও পরিবারের কথা বিবেচনায় এনে সরকারের সাথে গোপন চুক্তি করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখছেন। বিএনপি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মধ্য দিয়ে আমার প্রত্যাশিত সংলাপের আহ্বান ব্যর্থ হওয়ায় আমি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করছি। আমি ভেবেছিলাম আমাকে বিএনপি ছাড়তে বাধ্য করবেন না। কিন্তু আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। আশা করি আপনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিবেন।

(স্বাক্ষর)
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here