রাজশাহী : বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ৬২তম বছরে পদার্পন করলো দেশের ২য় বৃহৎতম  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে রোববার গৌরবের ৬১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন চত্বরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা এবং প্রাধ্যক্ষরা নিজ নিজ হলের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও বর্ণিল বেলুন-ফেস্টুন ওড়ানো হয়। এরপর সিনেট ভবনের সামনে একটি বৃক্ষরোপণ করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। পরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।

এই আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৬১ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশে যুগোপযোগী উচ্চশিক্ষা ও মৌলিক গবেষণার বিস্তারে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি বলেন, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও প্রসারের মাধ্যমে আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশ, জাতি ও সমাজকে আলোকিত করা ছাড়াও জাতির উন্নয়নে এক গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তেব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গত ৬১ বছরের ইতিহাস কখনই ভোলার নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ক্যাম্পাসকে যত প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে যা দেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে করতে হয়নি। কিন্তু তারপরও শিক্ষা ও গবেষণাসহ সকল বিষয়ে অবদান রেখেই যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাই আমার মনে হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি আরও বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধে অবদান রাখা এই ক্যাম্পাসটি ভবিষ্যতে তার ধারা অব্যাহত রাখবে। এ জন্য এখনকার শিক্ষার্থীদের সেই ভাবেই নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের কতোটা চর্চা হচ্ছে তা আমাদের বিবেচনা করতে হবে।

এদিকে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ও রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি জাতির বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বীরোচিত অবস্থান রয়েছে। এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. জোহা ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন দায়িত্বনিষ্ঠ শিক্ষক। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী শহীদ হয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত সাফল্য ও গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও রেজিস্ট্রার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্ঠা সাদেকুল আরেফিন মাতিন।

রায়হান হোসাইন/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here