ঘুমানোর জন্য ১৫ লাখ টাকা দেবে নাসা!

স্টাফ রিপোর্টার :: ব্যস্ত জীবনে বিশ্রাম নেওয়ার সময়ই পান না অনেক মানুষ। অনেকে আবার ঠিক মতো ঘুমানোরও অবসর পান না। কিন্তু আপনাকে যদি এমন চাকরির সুযোগ দেওয়া হয় যেখানে আপনি যতক্ষণ খুশী ঘুমাতে পারবেন, ঘুম থেকে ওঠার কোনও তাড়া থাকবে না,তাহলে কেমন হবে?

হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। সম্প্রতি আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি) তাদের নতুন এক প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে। যেখানে তারা বলেছে, যারা টানা ৬০ দিন শুয়ে কাটাতে পারবেন, তাদেরকে বেতন দেবে তারা। এই বেতনের পরিমাণও কম নয়। এজন্য তাদেরকে দেওয়া হবে ১৮ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। অবশ্য ঘুমিয়ে কাটানোর এই সুযোগ দেওয়া তাদের গবেষণারই একটা অংশ।

দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, মাধ্যাকর্ষণহীন কোনও জায়গা, যেখানে শরীরের কোনও ওজন নেই, সেখানে মানুষের শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়ে তা বুঝতেই এই গবেষণা করা হবে। এছাড়া ওজনশূন্য জায়গায় শরীরের পেশী এবং হাড়ের গঠনে কোনও পরিবর্তন আসছে কিনা, এলেও তা কী ধরণের হবে সেটাও বোঝা যাবে এই পরীক্ষা থেকে।

এই পরীক্ষার জন্যই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র দুটি  মুলত ২৪ থেকে ৫৫ বছর বয়সী অন্তত ১২ থেকে ১৩ জন নারী ও পুরুষকে খুঁজছেন।

মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চাঁদ অথবা মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর থেকে অনেকটা কম। তাই মহাকাশচারীরা সেখানে দীর্ঘ দিন থাকলে, শরীরের উপর কী প্রভাব পড়বে, তা জানতে চায় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি। সেই জন্যই এমন পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে তারা। এই পরীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যান্টি গ্র্যাভিটি বেড রেস্ট স্টাডি’।

মহাকাশ গবেষণা সংস্থা দুটি জানিয়েছে, পরীক্ষার অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারীদের তাদের তৈরি বিশেষ ভাবে বানানো একটি বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে। এই বিছানায় মাধ্যাকর্ষণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অর্থাৎ, কখনও নিজেকে ভারী আবার কখনও নিজেকে পালকের মতো হালকা মনে হবে।

এই পরীক্ষার জন্য সারা পৃথিবী থেকেই স্বেচ্ছাসেবক নেওয়া হবে। পরীক্ষা ৬০ দিন হলেও সব মিলিয়ে থাকতে হবে প্রায় ৮৯ দিন। কারণ প্রথম ৩০ দিন বিভিন্নরকম শারীরিক পরীক্ষা করা হবে স্বেচ্ছাসেবকদের।

মহাকাশচারীরা যখন মহাশূন্যে যায় তখন তাদের বিভিন্নরকম শারীরিক চাপ ও পরিবের্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন- পেশী ক্ষয়, হাড়ে সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় মহাশূন্যে একা থাকার কারণে তাদের বিভিন্ন মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়।যদি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রগুলোর এই গবেষণা সফল হয়, তাহলে বিজ্ঞানীরা মহাকাশচারীদের জন্য অ্যান্টি-গ্রাভিটি যন্ত্র তৈরি করতে পারবেন যা তাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here