শিশু সহিংসতাস্টাফ রিপোর্টার :: গত বছর দেশে শিশু নির্যাতন বেড়েছে। এ সময় ৩ হাজার ৮৪৫ শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭১০ শিশু অপমৃত্যু এবং ৮৯৪ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)। সংগঠনটি বলছে, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ সামগ্রিকভাবে ২০১৭ সালে শিশু অধিকার পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বার্ষিক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএসএএফ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ও বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করেই এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএএফের পরিচালক আবদুস শহিদ মাহমুদ। তিনি বলেন, গত বছর সামগ্রিকভাবে শিশু নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে ৭ দশমিক ১৩ ভাগ। এ সময় অপমৃত্যু এবং যৌন নির্যাতন বেড়েছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ৬৭ ও ৩০ দশমিক ৩২ ভাগ। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে শিশু হত্যা ও ধর্ষণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গত বছর ৩৩৯ শিশু নিহত ও ৫৯৩ শিশু ধর্ষিত হয়েছে। এটা ২০১৬ সালের চেয়ে যথাক্রমে ২৮ ভাগ ও ৩৩ ভাগ বেশি। সেই সঙ্গে বেড়েছে গণধর্ষণ, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ, বখাটেদের মারধর-কুপিয়ে জখম এবং গোপনে অশ্নীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা।

তবে ২০১৬ সালের তুলনায় গত বছর কমেছে বাবা-মায়ের হাতে শিশু হত্যা (-২২%), শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক নির্যাতন (-৫৫%) এবং কথিত চুরির অপরাধে দরিদ্র শিশুদের পিটিয়ে নির্যাতন (-৩৮ %)।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশু নির্যাতন ২০১৬ সালের তুলনায় বেড়ে যাওয়ার বিশেষ কারণ বিচারহীনতা ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, অপরাধীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং স্থানীয় সালিশে আপস-মীমাংসার প্রবণতা।

এ সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, শিশু নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে শিশু অধিদপ্তর ও জাতীয় শিশু অধিকার কমিশন গঠন করা জরুরি।

ফোরামের চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭/৮ কোটিই হচ্ছে এই শিশুরা। তাই তাদের অধিকার রক্ষায় সংসদে বছরে দুইবার পূর্ণ দিবস শুধু শিশুদের নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here