২১ বিশিষ্ট নাগরিককে প্রধানমন্ত্রীর একুশে পদক প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার :: নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিকের মাঝে ‘একুশে পদক ২০১৯’ বিতরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ী অথবা তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ বেসামরিক সম্মাননা- একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবারের পদক বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করে।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন- ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখার জন্য অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু ও অধ্যাপক মনোয়ার ইসলাম।

শিল্পকলায় ভূমিকা রাখার জন্য সুবীর নন্দী (সঙ্গীত), আজম খান (সঙ্গীত, মরণোত্তর), খায়রুল আনাম শাকিল (সঙ্গীত), লাকী ইনাম (অভিনয়), সুবর্ণা মোস্তফা (অভিনয়), লিয়াকত আলী লাকী (অভিনয়), সাইদা খানম (আলোকচিত্র) ও জামাল উদ্দিন আহমেদ (চারুকলা)।

মুক্তিযুদ্ধে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য, গবেষণায় ডক্টর বিশ্বজিৎ ঘোষ ও ড. মাহবুবুল হক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া।

ভাষা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস।

পদক বিজয়ীরা প্রত্যেকে একটি করে স্বর্ণপদক, সনদ ও দুই লাখ টাকার চেক পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেনে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের ভাষার অধিকার, আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে রক্ষার চর্চাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের কর্তব্য।

দেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম; অনেক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আমাদের অর্জিত সুফলগুলো ভোগ করুক, যাতে করে তারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারে।

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ যেন পিছিয়ে দিতে না পারে এবং তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একুশ (ভাষা আন্দোলন) আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। একুশ আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করা যায়, নিজের মাতৃভাষাকে রক্ষা করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার আসনে নিয়ে যাওয়া এবং বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে থাকা। ‘আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

ভাষা আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে একসময় তার অবদান ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল।

জনগণ যদি জাতির পিতার জীবনীগ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ে তাহলে জানতে পারবে কীভাবে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তা অনুসারণ করে পরবর্তীতে সরকার প্রধান হিসেবে তিনিও সেখানে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন।

১৯৯৬-২০০১ সালে তার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অবকাটামো নির্মাণ শুরু হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত সরকার ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দিয়েছিল।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এসে সে নির্মাণ কাজের শেষ করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here