ডেস্ক রিপোর্ট:: করোনার ডেল্টা ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইংল্যান্ডে লকডাউনের মেয়াদ আরও এক প্রায় এক মাস বাড়িয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। নতুন সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত লকডাউনে থাকবে ইংল্যান্ড।

সোমবার (১৪ জুলাই) যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরকারের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। পাশপাশি তিনি এও বলেছেন, লকডাউন শিথিলের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে দেশের করোনা পরিস্থিতির ওপর; যদি ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির প্রত্যাশিত উন্নতি না হয়, সেক্ষেত্রে আরও বাড়ানো হবে লকডাউনের মেয়াদ।

এদিকে, ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এনএইচএস এক বার্তায় জানিয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যে ইংল্যান্ডসহ পুরো ব্রিটেনে করোনা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতির আশা করা হচ্ছে। কারণ এই সময়সীমায় দেশজুড়ে গণটিকাদান কর্মসূচি আরও গতিশীল করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বরিস জনসন বলেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে দেশের সর্বত্র করোনা টেস্ট ও টিকাদান বাড়ানো হবে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হবে ২৩ ও ২৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিলেন, ইংল্যান্ডসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন তুলে নিতে চার ধাপের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেই অনুযায়ী আগামী ২১ জুন থেকে সব ব্রিটেনবাসী করোনা বিধিনিষেধ মুক্ত জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।

ডিসেম্বরের পর থেকে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ার‌ল্যান্ডে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ইংল্যান্ডে তা কাঙ্খিত পর্যায়ে হয়নি। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ইংল্যান্ডে দৈনিক করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী , আক্রান্তদের ৯০ শতাংশই করোনাভাইরাসের এযাবৎকালেরর সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিযোজিত ধরন ডেল্টায় আক্রান্ত।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মূল করোনাভাইরাস এবং এর প্রধান চারটি অভিযোজিত ধরনের মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে উচ্চ সংক্রামক ও প্রাণঘাতী। মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে ৬০ শতাংশ এবং এর অভিযোজিত ধরন আলফার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি সংক্রামক ডেল্টা। এমনকি, বাজারে প্রচলিত কয়েকটি করোনা টিকার ডোজকেও ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা আছে ভাইরাসের এই অভিযোজিত ধরনটির।

এই পরিস্থিতে দেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগণকে করোনা টিকার আওতায় আনা এবং যাদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরই লকডাউন শিথিলের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত বলে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন ব্রিটেনের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) জানিয়েছে, দেশে দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে গত ২৮ দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন রোববার।

দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি। আরও কিছুদিন যদি ধৈর্য ধরতে পারি, তাহলেই এই মহামারিকে আমরা পরাজিত করতে পারব।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here